নির্বাচন আসন্ন। জোট মহাজোট এখন ভোটের মাঠে। আসন বণ্টনও শেষের পথে। সারাদেশে মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীদের বশে এনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদেরও নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনি গণসংযোগ শুরু করবেন বলে জানা গেছে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবার ১৪ দলের পাশাপাশি মহাজোটগতভাবে নির্বাচন করবে। এজন্য সারাদেশে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছাড়া প্রায় সব আসনেই মহাজোটের প্রার্থী চূড়ান্ত করে ফেলেছে আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে প্রার্থীদের কাছে চূড়ান্ত মনোনয়নের চিঠি দেওয়া শুরু হয়েছে।
শনিবারের (৮ ডিসেম্বর) মধ্যে জাতীয় পার্টিও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার পর একযোগে মাঠে নামবে মহাজোট। শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, শরিকদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টিকে ৫টি, জাসদ (ইনু) ৩টি, জাসদ (আম্বিয়া) ১টি, তরিকত ফেডারেশন ২টি ও জাতীয় পার্টিকে (জেপি) ২টি আসন দেওয়া হয়েছে।
মহাজোট এবার জাসদকে (ইনু) দিয়েছে ৩টি আসন। এছাড়া বাংলাদেশ জাসদের মঈন উদ্দিন খান বাদল চট্টগ্রাম-৮ আসন থেকে লড়বেন নৌকা প্রতীক নিয়ে। শরিক দল তরিকত ফেডারেশনকে দু’টি আসন দিয়েছে জোটের বড় দল আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি (জেপি) পাচ্ছে দু’টি আসন। বিকল্প ধারার মাহী বি চৌধুরীকে দেওয়া হয়েছে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনটি। মহাজোটের হয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন তিনি। এছাড়া লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান ও মৌলভীবাজার-২ আসনে এম এম শাহীনকে নৌকা প্রতীক দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
সূত্র জানিয়েছে, ১১ ডিসেম্বর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিকল্প ধারা সভাপতি অধ্যাপক বি চৌধুরী ও জাপার ভারপ্রাপ্ত কর্ণধার রওশন এরশাদকে নিয়ে একযোগে সভা সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, ১৪ দল ও মহাজোটের শীর্ষ নেতারাও পৃথকভাবে সিডিউল করে একযোগে প্রচারণা চালাবেন। দলের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না বলেও সূত্র জয়নিউজের এ প্রতিবেদককে জানিয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সমর্থন জানাতে গণভবনে যান অবসরপ্রাপ্ত ৩২১ বেসামরিক কর্মকর্তা। তারা চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বলে জানা গেছে। এর আগে গত ২৭ নভেম্বর ১৪৭ জন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন। তারাও বর্তমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন। জানা গেছে প্রচার প্রচারণায় তারাও যুক্ত হবেন।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনি কৌশল ইতিমধ্যে চূড়ান্ত করলেও এখনই তা প্রকাশ করতে চাইছে না। ভোটের ঠিক ১০ দিন আগে সারাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রচার প্রচারণা চালাবে।
জানা গেছে, বিদেশের নির্বাচনগুলোর আইডিয়া ব্যবহার করে এবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে ভোটারদের কাছে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার পৌছে দেওয়া হবে। তবে কী পদ্ধতিতে আর কোথা থেকে এর উদ্বোধন হবে তা এখনই বলতে চাননি নেতারা।
এছাড়া কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, অভিনেতা ও জনপ্রিয় অভিনেতাদের পাশাপাশি নায়িকাদেরও এবার আওয়ামী লীগের প্রচারণায় দেখা যাবে।
জানা গেছে, স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের প্রচারে নামবেন কণ্ঠশিল্পীরা। দেখা যাবে খেলার জগতের তারকাদেরও।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, টিমওয়ার্ক করে আমরা সারাদেশে প্রচার প্রচারণা চালাবো। জোট-মহাজোট ও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করতে দিন-রাত গণসংযোগ করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তিনি বলেন, নমিনেশন কে পেল আর কে পেলেন না সেটা মুখ্য বিষয় নয়। এখন দলের প্রয়োজনে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
জয়নিউজ/বিশু/জুলফিকার