জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল)। দোয়া অনুষ্ঠানের খরচ দেখানো হয় ১৫ লাখ টাকা। তাও আবার কোন ধরণের বিল ভাউচার ছাড়াই।
শুধু বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর এ অনুষ্ঠানের ব্যয়ের ক্ষেত্রেই এমন হেরফেরের ঘটনা নয়, বরং প্রতিষ্ঠানটির শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের অর্থও নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠেছে কেজিডিসিএল’র কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) বিকেলে দুদক চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১-এর সহকারী পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে দুদকের তিন সদস্যের একটি টিম এই অভিযান চালায়। এ সময় প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে প্রায় ১১ কোটি টাকা নিয়ম বর্হিভূতভাবে অর্থ উত্তোলনের প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে বলে জানায় দুদক।
দুদক সূত্রে জানা যায়, কর্ণফুলী গ্যাসে ২০২১-২২ অর্থবছরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের এফডিআরের মুনাফাসহ পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পায় দুদক। এর প্রেক্ষিতে কেজিডিসিএলে অভিযান চালায় সংস্থাটি। দুদকের কর্মকর্তারা অভিযানে গিয়ে কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (হিসাব) উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাজেট) এবং উপ-ব্যবস্থাপককে (বাজেট, ফান্ড, ওয়েলফেয়ার) জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
অভিযান শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, বিল ভাউচার ছাড়াই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কমিশনের নির্দেশে অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। অভিযানে কোনো ভাউচার ছাড়াই কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া যায়। সর্বশেষ ১৭ মার্চ তারা ১৫ লাখ টাকার খরচ দেখিয়েছে। কিন্তু কোনো ভাউচার নেই। আমরা এসবের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছি।
দুদকের এ কর্মকর্তা বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় দুই কোটি টাকা, ২০-২১ অর্থবছরে দুই কোটি ৩২ লাখ টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে এক কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকার একটা হিসেব পাওয়া গেছে। যেগুলো কোনো ভাউচার ছাড়াই খরচ দেখানো হয়েছে। তবে তারা কিছু ভাউচার দেখিয়েছে, কিন্তু সেগুলো কতটুকু সত্য তাও তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। কমিশনের নির্দেশে তদন্ত সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেএন/এমআর