বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপির চলমান সংগ্রাম অব্যাহত আছে, অব্যাহত থাকবে। দেশি বিদেশি কোনো শক্তি এ অবৈধ সরকারকে আর ক্ষমতায় রাখতে পারবে না। দেশি বিদেশি কোনো শক্তির জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে এ অবৈধ সরকারকে রাখা সম্ভব হবে না। তাদের বিদায় নিতে হবে। এরপর বাংলাদেশের মানুষ তাদের ভোটাধিকারের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে এমন সরকার গঠন করবে, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে, যারা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ সেই সরকারের অপেক্ষায় আছে।
তিনি শুক্রবার (২২ মার্চ) বিকালে নগরীর কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন রাজবাড়ী কমিউনিটি সেন্টারে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে কারানির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মাননা অনুষ্ঠান ও ইফতার মাহফিলে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি দেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মী ও চট্টগ্রামবাসীকে সালাম ও ঈদের শুভেচ্ছা জানান।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এনামুল হক এনামের পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দীন মজুমদার, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
এতে বিগত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ৭ জানুয়ারী নির্বাচন পর্যন্ত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে দক্ষিণ জেলা বিএনপির ২০০ জন কারানির্যাতিত নেতাকর্মীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
এসময় আমীর খসরু বলেন, বিএনপির সংগ্রাম বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সংগ্রাম। দেশের মালিকানা ফিরে পাবার সংগ্রাম। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক অধিকার ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। যতদিন স্বৈরাচার পদত্যাগ না করবে, ততদিন এ সংগ্রাম চলবে। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের মালিকানা ফিরিয়ে দেয়ার সংগ্রাম চলবে।
সাতই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাতই জানুয়ারিতে কি হয়েছিল ? ডামি প্রধানমন্ত্রী, ডামি এমপি, ডামি নির্বাচন। আরও একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ হয়েছে, বাংলাদেশের ৯৫ শতাংশ মানুষ তারেক রহমানের পক্ষে, বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছে। আবার বলি, সাতই জানুয়ারি বাংলাদেশের মানুষ, ৯৫ শতাংশ মানুষ তারেক রহমানের পক্ষে, বিএনপির পক্ষে রায় দিয়েছে। আর যিনি আজ প্রধানমন্ত্রীর আসনে অবৈধভাবে বসে আছেন, ৫ শতাংশ মানুষও তার পক্ষে আসেনি, ভোটকেন্দ্রে আসেনি অর্থাৎ বাংলাদেশের মানুষ এ অবৈধ রেজিমকে প্রত্যাখান করেছে। বাংলাদেশের এ অবৈধ নির্বাচনী কার্যক্রমকে প্রত্যাখান করেছে। বাংলাদেশের মানুষ ঐকব্যদ্ধভাবে, একটা ঐক্যজোট সৃষ্টির মাধ্যমে গণতন্ত্রের পক্ষে, মানবাধিকারের পক্ষে, আইনের শাসনের পক্ষে, বাক স্বাধীনতার পক্ষে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের পক্ষে পরিস্কার রায় দিয়েছে সাত তারিখে।
তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে শুধু রাজনৈতিক দলের ঐক্য ঘটেনি, ৯৫ শতাংশ বাংলাদেশের মানুষের ঐক্য ঘটেছে। সুশীল সমাজ, যারা আগে মুখ খুলত না, তারাও পরিস্কার ভাষায় এ অবৈধ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে, তারা আজ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলছে। পেশাজীবীরা বলছে, এমনকি গণমাধ্যম যারা আছে, যারা যারা শুধু শেখ হাসিনার সুবিধাপ্রাপ্ত গণমাধ্যম, তার বাইরের গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যমের কর্মীরাও প্রত্যাখান করেছে। তারাও আজ গণতন্ত্রের পক্ষে রায় দিয়েছে। তারাও আজ বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য এ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে। আগামীদিনে মুক্ত গণমাধ্যমের অপেক্ষায় তারা আছে। একজন জার্নালিস্ট যেন সসম্মানে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, সেই অপেক্ষায় আছে। আজ সবাই ওইদিনের অপেক্ষায়, যেদিন এ ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায় হয়ে একটি মুক্ত বাংলাদেশে, মুক্ত আবহাওয়ায়, মুক্ত মানুষ হিসেবে বাঁচার জন্য আগামীদিনের সংগ্রামের অপেক্ষায় আছে।
চলমান সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানিয়ে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির ঘাঁটি। সুতরাং চলমান আন্দোলনে দক্ষিণ জেলাকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা সবাই মিলে, আজ যে জাতীয় ঐক্য হয়েছে, যে ৯৫ শতাংশ মানুষ এ সরকারকে প্রত্যাখান করেছে, তাদের নিয়ে হাতে হাত মিলিয়ে আমরা এ আন্দোলনকে সফল করব। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবো।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ডামি ভোটে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সহ গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে চলেছে সরকার। সরকারের ব্যর্থতা, লুটপাট, অব্যবস্থাপনা কারণে এমনিতেই জনগণ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। এরমধ্যে দফায় দফায় সব পণ্যের দাম বাড়ানোয় মানুষের জীবনযাত্রার ওপর চাপ পড়ছে। সরকারের দুর্নীতির মাশুল দিতে হচ্ছে জনগণকে।
মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, আওয়ামীলীগ লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে তলানিতে নিয়ে গেছে। রাষ্ট্রের প্রতিটি সেক্টরে মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দূর্নীতি করেছে। আওয়ামী লীগের লুটপাট দূর্নীতির কারণে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভেঙে পড়েছে। দেশের মানুষের জীবন অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। এই দূর্ভিক্ষ মোকাবেলা না করে আওয়ামী লীগ লুটপাট আর অবৈধ ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার জন্য বিএনপিকে দমানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে আছে।
জালাল উদ্দীন মজুমদার বলেন, নাগরিকদের জানমালের নিরাপত্তা দিতে এসরকার ব্যর্থ হয়েছে। দেশ আজ খুনি লুটেরাদের স্বর্গভূমিতে পরিণত হয়েছে। মানুষের জীবন বিপন্ন। মানবাধিকার ভুলুন্ঠিত। ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
আবুল হাশেম বক্কর বলেন, এসরকার দেশকে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলেছে। বর্তমানে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। আগামী দিনে এই ভোটচুর সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে আবু সুফিয়ান বলেন, বর্তমান জনবিচ্ছিন্ন সরকার জনগনের কথা চিন্তা করছে না। দেশের জনগনের উপর জুলুম নির্যাতন করে তারা লুটপাটের অর্থ বিদেশে পাচার করছে। জনগনকে মামলা হামলা ও ভয় দেখিয়ে সবকিছু অনায়াসে করে যাচ্ছে।
এনামুল হক এনাম বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন কখনো ব্যর্থ হয়নি। সাময়িকভাবে বাধাগ্রস্ত হতে পারে কিন্তু সার্বিকভাবে কখনোই ব্যর্থ হয় নাই। মুসোলিনি বহুদিন রাজত্ব করেছে কিন্তু পরিণতি হয়েছে ভয়াবহ। জনগণের আন্দোলনের মুখে কোনো ফ্যাসিস্ট সরকার টিকে থাকতে পারে নাই।
এতে উপস্থিত ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নাজিম উদ্দীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এড. আশরাফ হোসেন চৌং রাজ্জাক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিষ্টার ওসমান চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াসিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইন্জি. বেলায়েত হোসেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিষ্টার ওসমান চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আলহাজ্ব মোশারফ হোসেন, অ্যাড. এস এম ফোরকান, আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী, এম মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, এস এম মামুন মিয়া, লায়ন নাজমুল মোস্তফা আমিন, অ্যাড. নূরুল ইসলাম, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাড. ফৌজুল আমিন চৌং, খোরশেদ আলম, মফজল আহমদ চৌধুরী, নূরুল ইসলাম সওদাগর, জামাল হোসেন, ভিপি মোজাম্মেল, মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জাহেদ, হুমায়ুন কবির আনসার, আমিনুর রহমান চৌধুরী, হাজী মো. রফিক, মো. ইসহাক চৌধুরী, হামিদুল হক মান্নান, নূরুল কবির, মঈনুল আলম ছোটন, শফিকুল ইসলাম শফিক, সাজ্জাদ হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, অ্যাড. কাশেম চৌধুরী, বিএনপি নেতা মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, ইব্রাহিম খলিল চেয়ারম্যান, নুরুন্নবী চৌধুরী, হাসান চৌধুরী, আবুল কালাম আবু, জেলা যুবদলের সভাপতি মো. শাহজাহান, সাধারণ সম্পাদক মো. আজগর, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মন্জুর আলম তালুকদার, সদস্য সচিব জমির উদ্দীন চৌধুরী, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন, জাসাসের আহ্বায়ক জসীম উদ্দীন চৌধুরী, সদস্য সচিব নাছির উদ্দীন, ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি, সদস্য সচিব কামরুদ্দিন সবুজ, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা হাফেজ ফোরকান, সদস্য সচিব মাওলানা হাফেজ জাবের হোসাইন চৌধুরী, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ফাতেমা আক্তার মুন্নি, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ লোকমান, ইলিয়াস কাঞ্চন, মাহমুদুর রহমান মাদু, শহীদুল্লাহ চৌধুরী, রাসেল ইকবাল, কামাল উদ্দীন, রেজাউল হক চৌধুরী রেজা, মোহাম্মদ আইয়ুব, সচিব গাজী আবু তাহের, হাজী মোহাম্মদ ওসমান, আ,ক,ম মোজাম্মেল হক, বাবু খাঁন, জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী, হাজী আবদুল মন্নান তালুকদার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মোজাম্মেল হক, আবুল হোসেন বাবুল, হামিদুর রহমান পিয়ারু, জেলা কৃষক দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ মীর জাকের হোসেন প্রমূখ।
জেএন/এমআর