নগরীর ফয়’স লেকস্থ চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও তাঁর সহধর্মিনী চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান।
আজ ৩১ মার্চ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় চিড়িয়াখানা পরিদর্শনকালে সেখানে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাঘ জো বাইডেন ও বাঘিনী জয়ার সংসারে জন্ম নেয়া প্রকৃতি, স্রোতস্বীনি ও রূপসী নামে ৩টি শাবক কোলে নেন তারা। বাঘিনী জয়ার জন্ম ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আর বাঘ জো বাইডেনের জন্ম ২০২০ সালে ২৮ ডিসেম্বর।
কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ আরাফাত সিদ্দিকী, চিড়িয়াখানার সদস্যসচিব ও এনডিসি হুছাইন মুহাম্মদ, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন, জেলা নাজির মোঃ জামাল উদ্দিন ও চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাৎ হোসেন শুভ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
চিড়িয়াখানায় গিয়ে তিনটি বাঘ্র শাবক কোলে নিয়ে ও অন্যান্য পশু-পাখি দেখে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সহধর্মিনী ও চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে গিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দু’টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে এসেছিলাম। সে দু’টি বাঘ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৩টি শাবকসহ মোট বাঘের সংখ্যা ১৭টি। এর মধ্যে ৫টি বাঘ ও ১২টি বাঘিনী। এখানে সাদা বাঘও রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের পশু-পাখি এই চিড়িয়াখানার সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করেছে। এ চিড়িয়াখানায় শুধু বাংলাদেশের নয়, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও ১ মাস বয়সী তিনটি বাঘ্র শাবকসহ বিভিন্ন পশু-পাখি দেখতে দেশের বাইরে থেকেও বিদেশী পর্যটকেরা আসা শুরু করেছে। তিনি বলেন, চিড়িয়াখানার পার্শ্ববর্তী ১০ একর জমি দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ দখলদারদের দখলে ছিল, বিভিন্ন সময়ে বিশেষ করে বর্ষাকালে পাহাড় ধ্বসে এখানে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটেছে। গত বছরের জুলাই মাস থেকে উচ্ছেদের মাধ্যমে জায়গাগুলো উদ্ধার করে সরকারের দখলে নিয়ে এসেছি। চট্টগ্রামের জনসাধারণের আগ্রহের কথা চিন্তা করে সেখানে আমরা একটি বার্ডস পার্ক করার জন্য পরিকল্পনা করেছি। আমার ইতোমধ্যে আমেরিকার ফ্ল্যামিংগো, কিছু ম্যাকাও এবং পেলিক্যানসহ বিভিন্ন ধরণের কিছু পাখির ওয়ার্কঅর্ডার দিয়েছি, এর বাইরে কিছু পেলিক্যান ও কিছু ম্যাকাও পাখি পাওয়া গেলে চট্টগ্রামে আর্ন্তজাতিক মানের একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ বার্ডস পার্ক করতে পারবো বলে আশা রাখি। এছাড়া জঙ্গল সলিমপুর ও ফটিকছড়িসহ যেখানে পাহাড়-পর্বত-টিলা রয়েছে সেখানে উপযুক্ত যায়গা পাওয়া গেলে সেখানে নাইট সাফারী পার্ক করার পরিকল্পনা রয়েছে। যেখানে পাশু-পাখিগুলো খোলা জায়গায় থাকবে এবং মানুষের চলাচলের জন্য নির্দিষ্ট পথ থাকবে।
অবৈধ জায়গা উদ্ধার সম্পর্কে জেলা প্রশাসক বলেন, চিড়িয়াখানার পার্শ্ববর্তী যে ১০ একর জায়গা অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে সেগুলোর আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ১’শ ৫০ কোটি টাকা। আমরা একটি মাস্টার প্ল্যানের কাজে হাত দিয়েছি। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে এ কাজটি বাস্তবায়ন হবে। স্বল্প মেয়াদে এখানে এখানে একটি বার্ডস পার্ক করতে পাই। পাশাপাশি আরও অ্যামিউজমেন্টের জন্য সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়াতে যে সকল বার্ডস পার্কগুলো রয়েছে সেগুলোতে জনসাধারণ, দর্শনার্থী ও পর্যটকরা আসে। আমরা এটিকে এমনভাবে তৈরী করতে চাই শুধুমাত্র বাংলাদেশের নয়, দেশের বাইরে থেকেও পর্যটকেরা এ বার্ডস দেখতে আসবে।
জেএন/এমআর