আমাদের আছে বিশাল সমুদ্র এলাকা। এই বিস্তীর্ণ সমুদ্র অঞ্চলের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং সমুদ্র সম্পদ রক্ষার্থে একটি দক্ষ ও চৌকশ নৌবাহিনীর বিকল্প নেই।
রোববার (৯ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পরপরই বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টায় দুইটি পেট্রোল ক্র্যাফট নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনী যাত্রা শুরু করে। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু নৌবাহিনীর প্রধান ঘাঁটিগুলোকে একযোগে কমিশন প্রদান করেন। পাশাপাশি তাঁর দূরদর্শিতায় প্রণীত হয় ‘দ্য টেরিটরিয়াল ওয়াটারস অ্যান্ড মেরিটাইম জোনস অ্যাক্ট’। জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে গৃহীত হয়েছে ফোর্সেস গোল ২০৩০।
তিনি বলেন, এ মহাপরিকল্পনার আলোকে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অত্যাধুনিক ফ্রিগেট ও করভেটসহ ২৭টি যুদ্ধজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। ২০১১ সালে সংযোজিত নেভাল এভিয়েশন, স্পেশাল ওয়্যার ড্রাইভিং এবং স্যালভেজ কমান্ড এ বাহিনীর সক্ষমতাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৭ সালে নৌবহরে যুক্ত হওয়া দুইটি সাবমেরিন আমাদের নৌবাহিনীকে পূর্ণাঙ্গ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে দেশের সমুদ্র জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষায় পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নিজেদের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, আমরা কারুর সঙ্গে যুদ্ধ চাই না । আমরা শক্তিকামী জাতি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু আত্মরক্ষার্থে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ণ রাখতে আমরা আপসহীন। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে কখনো পিছপা হবেন না।
মিডশিপম্যান-২০১৬ এবং ডিইও ২০১৮/বি ব্যাচের নবীন কর্মকর্তাদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে এই শীতকালীন কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। নৌবাহিনীর ২০১৬ ব্যাচের ৫৯ জন মিডশিপম্যান ও ২০১৮/বি ব্যাচের ৭ জন ডাইরেক্ট এন্ট্রি অফিসারসহ মোট ৬৬ জন নবীন কর্মকর্তা কমিশন লাভ করেন। এদের মধ্যে ৪ জন নারী, ১ জন মালদ্বীপ এবং ১ জন শ্রীলঙ্কার কর্মকর্তা রয়েছেন।
সদ্য কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে মিডশিপম্যান আহমেদ রিদওয়ান খান ‘সোর্ড অব অনার’ পেয়েছেন। মিডশিপম্যান ইজাজ মাহমুদ শুভ ‘নৌ-প্রধান স্বর্ণপদক’ এবং সাব লেফটেন্যান্ট সাঈফ হোসেন সুধী ‘বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক’ পেয়েছেন।