আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দলে কিছু শাস্তি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানাভাবে দিয়ে দিয়েছেন। কতজন অনেক বড় জায়গা থেকে নেমে গেছে। শুধু জেলে পুড়লেই শাস্তি, গায়ে আঘাত করলেই শাস্তি? শাস্তি অনেক রকম। এবার নেত্রী যে কৌশল নিয়েছেন, দলের মধ্যেও কেউ ফ্রি স্টাইল করলে শাস্তি কিন্তু পেতেই হবে। তিনি সব নোট করে রাখেন, সময় মতো ব্যবস্থা নেবেন।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মুজিবনগর দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে খুলনা বিভাগের সাংগঠনিক জেলা শাখাগুলোর নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা ইলেকশন করেছি, স্বতন্ত্রদের ভোট করতে দিয়েছি, এতে কী হয়েছে? নতুন সংসদ বসেছে, নতুন সরকার হয়েছে। অনেক বালা-মুসিবতের কথা অনেকে বলেছেন। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সে সংকট কাটিয়ে উঠেছি। তারা (বিএনপি) ভেবেছিল ইলেকশন হলেও দুর্ভিক্ষ হবে, সরকার পাঁচদিনও টিকবে না। আবোল-তাবোল বলা তাদের রাজনীতি। আমরা সেদিকে মন দেব না। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। ইলেকশন হয়ে গেছে, সামনে উপজেলা নির্বাচন, আমাদের নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব-সংঘাত, মনোমালিন্য এসব যদি দৃশ্যপটে হাজির করা হয়, তাহলে আমাদের চলার পথ কঠিন হয়ে যাবে।
উপজেলা নির্বাচনকে কেউ যেন প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, সে বিষয়ে সতর্ক করে তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা কেউ করবেন না। কেউ প্রার্থী হতে চাইলে হবে, বাধা নেই। নৌকা দেওয়া হচ্ছে না কিছু বাস্তব পরিস্থিতির কারণে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি করেনি, তারপরও ৪২.৮ শতাংশ টার্ন আউট। এটা সারা পৃথিবীর স্ট্যান্ডার্ডে সন্তোষজনক।
তিনি আরও বলেন, একজনকে নেতা মানি, তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) প্রমাণ করেছেন, তিনিই সঠিক ক্রাইসিস ম্যানেজার। তাকে হাল ধরতে দিন। তার পেছনে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। দেশের প্রবৃদ্ধি সাড়ে আট ভাগের স্বপ্ন দেখলেও সাড়ে পাঁচ নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। কিন্তু সংকটে আমরা পড়ব না। জিনিসপত্রের দাম কমতে শুরু করেছে, পেঁয়াজের সংকটও কেটে গেছে। জ্বালানি তেলের দামও সমন্বয়ের মাধ্যমে কিছুটা কমানো হয়েছে। আস্তে আস্তে হবে, অপেক্ষা করতে হবে।
সবাইকে দায়িত্ব নিয়ে কথা বলার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সবাই দায়িত্বশীল কথা বলবেন। অনেককে দেখি ফেসবুক লাইভে এসে বলতে থাকেন, যার যা খুশি…। এগুলো ঠিক নয়। দল করলে দলের শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। ফ্রি স্টাইল কোন কথা বলবে, আর দলকে সেগুলো নিতে হবে, এটা ঠিক নয়। আপনারা আসল শত্রুকে চিনুন। আসল শত্রু হচ্ছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন সাম্প্রদায়িক শক্তি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনীতির সংকট একেবারে কেটে গেছে এ কথা বলা যেমন ঠিক নয়, তেমনি অর্থনীতির ভয়াবহ অবস্থা যারা বলেন, সেটিও ঠিক নয়। আজকে আফ্রিকার দেশগুলোতে অস্থিরতা, লোহিত সাগরে দ্বন্দ্ব। এসব আছে, সংকটও আছে। আজকে পৃথিবী একটা গ্লোবাল ভিলেজ, কোথাও সংকট হলে তার রেশ অন্য দেশে এসে পরে। আমাদের জ্বালানি, প্রাইস অব এসেনসিয়াল, ডলার সংকট এর সবই আন্তর্জাতিকভাবে সম্পর্কিত।
আগামী ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার দিবসের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, মূল অনুষ্ঠান হবে মুজিবনগরে। আমরা মুজিব নগর দিবস কীভাবে সার্থক করবো ও পালন করবো সেটি নিয়ে আলোচনা করবো।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।
জেএন/এমআর