দিনের তাপমাত্রা ৪০ ছুঁই ছুঁই। চৈত্রের তাপদাহে হাঁসফাঁস জনজীবন। প্রচণ্ড গরমে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন। প্রতিদিন নতুন নতুন রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। দিন দিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
কলেরা হাসপাতাল হিসেবে পরিচিত মহাখালীর আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, আইসিডিডিআরবি হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরমের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। গত কয়েকদিন অতিরিক্ত গরমের কারণে পানির চাহিদা বাড়ছে। অনিরাপদ পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে।
ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের অন্যতম ভরসাস্থল আইসিডিডিআর’বিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর ও এর আশপাশ এলাকায় ডায়রিয়ার প্রকোপে দিনে সাড়ে চারশো থেকে ৫০০ জনের বেশি রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। অন্য সময়ে এই সংখ্যা ৩শ থেকে সাড়ে ৩শ পর্যন্ত থাকে।
আইসিডিডিআরবি সূত্র বলছে, সাধারণত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে শেষ সপ্তাহে রোগী চূড়ান্তভাবে বাড়ে। কিন্তু এ বছর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় রোগীর সংখ্যা কম।
আইসিডিডিআরবি হাসপাতালের প্রধান ডা. বাহারুল আলম বলেন, অন্যান্য বছরে তুলনায় এ সময়ের এবার রোগীর সংখ্যা কম। তবে বরিশাল, পটুয়াখালী, জয়পুরহাট, ফরিদপুর ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। রোগীদের সিংহভাগই বয়স্ক। এক মাস রোজা রাখার পর মানুষ আবার গরমে মানুষ রাস্তার পাশের খাবার খায়, অনিরাপদ পানি পান করে। এগুলোই হয়তো কারণে ডায়ারিয়া বাড়তে পারে।
করণীয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত হলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি এবং লবণ বেড়িয়ে যায়। বিষয়টা অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বের সঙ্গে নেন না অভিভাবকরা। তবে এর চিকিৎসা খুবই সহজ। যতবার পাতলা পায়খানা হবে, ততবার একটি করে খাবার স্যালাইন খেতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে এমনিতেই রোগী সুস্থ হয়ে যাবে, তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসারও প্রয়োজন হবে না।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ডায়রিয়া রোধ করা যায় উল্লেখ করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল বলেন, ডায়রিয়া রোধ করতে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। রান্নাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতে হবে জীবাণুমুক্ত পানি।
তিনি বলেন, ডায়রিয়াজনিত রোগ চলে যায়নি। আমরা একে মোকাবিলা করতে চাই। ডায়রিয়া শুরু হলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
জেএন/এমআর