ভারতে সাত দফায় আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হচ্ছে। এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতাসীন বিজেপির নরেন্দ্র মোদি সহজেই জয়ী হবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি ভারতীয় ভোটারদের প্রধান উদ্বেগের বিষয়। তবে মোদির নেতৃত্ব এবং ভারতের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মর্যাদা সম্ভবত মোদিকে পুনর্নির্বাচনের দৌড়ে সহায়তা করবে। একটি সমীক্ষায় এমনটিই উঠে এসেছে।
২৮টি রাজ্যের মধ্যে ১৯টি রাজ্যে ভারতের সেন্টার ফর দ্য স্টাডি অব ডেভেলপিং সোসাইটির (সিএসডিএস) লোকনীতি জরিপে দেখা গেছে, বেকারত্বই ছিল ভারতের প্রাথমিক উদ্বেগ।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬২ শতাংশ বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির দ্বিতীয় মেয়াদে (গত পাঁচ বছরে) চাকরি পাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
২২ শতাংশ মানুষ বলছেন, মোদি সরকারের সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ হলো মুসলমানদের বিরোধপূর্ণ স্থানে রাম মন্দির নির্মাণ। ৮ শতাংশ বলেছেন, এটি তাদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
যদিও ভারত বিশ্বের এখন পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি, তবে বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি দেশটির সমৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করছে। দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মোদি ক্ষমতায় আসার ঠিক আগে (২০১৩/১৪ সালে) ৪.৯ শতাংশ থেকে ২০২২/২৩ সালে বেকারত্বের হার বেড়ে ৫.৪ শতাংশ হয়েছে। ১৫-২৯ বছর বয়সী শহুরে যুবকদের প্রায় ১৬ শতাংশ মানসম্পন্ন চাকরির অভাবের কারণে বেকার রয়েছেন।
জানুয়ারিতে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেন মোদি। জরিপে অংশ নেওয়া ২২ শতাংশ মানুষ বলেছেন, মোদি সরকারের করা বিভিন্ন কাজের মধ্যে এটা তাদের পছন্দের শীর্ষে। ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে সেখানে রাম মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। জরিপে অংশ নেওয়া ৮ শতাংশ ভোটার বিতর্কিত জায়গায় রাম মন্দির তৈরি করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ভোটের বছরে রাম মন্দির উদ্বোধন করে মোদি সরকার ভারতের সংখ্যাগুরু হিন্দু ভোটারদের মন জয় করতে চাইছেন বলে মত বিরোধীদের। জরিপে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ (৭৯ শতাংশ) লোক বলছেন যে, ভারত কেবল হিন্দু নয়, সমস্ত ধর্মের নাগরিকদের জন্য সমান। আর ৪৮ শতাংশ উত্তরদাতা বলেছেন, রাম মন্দির হিন্দু পরিচয়কে সুসংহত করবে।
আন্তর্জাতিক দরবারে ভারতের ক্রমবর্ধমান নেতৃত্বও মোদির পক্ষে ভোটারদের আকৃষ্ট করেছে। যার মধ্যে আছে- গত বছর জি২০ সম্মেলনে ভারতের সভাপতিত্ব এবং সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে জি২০ সম্মেলনের আয়োজন করার বিষয়টি। ৮ শতাংশ ভোটার বলেছেন, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ভারতের ইমেজ আরো ভালো করার যে চেষ্টা মোদী সরকার করছে, তারা সেটা পছন্দ করেন।
জেএন/এমআর