নগরীর টাইগারপাস থেকে পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত (ইউসুফ চৌধুরী সড়কের) র্যাম্পের স্থগিত নকশায় পরিবর্তন আনছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। সড়কটির ডিভাইডারের পরিবর্তে পশ্চিমাংশে রেলের জায়গায় র্যাম্প নির্মাণের জন্য বিকল্প খসড়া নকশা তৈরি করা হয়েছে। নকশাটি চূড়ান্ত করতে চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধি ও অংশীজনদের নিয়ে বৈঠক করবেন সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ। সকলের মতামতের ভিত্তিতেই খসড়া নকশাটি চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
জানতে চাইলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, টাইগারপাস-সিআরবি সড়কের মাঝে র্যাম্প নির্মাণের পরিকল্পনায় কিছুটা আপত্তি দেখা দেয়। তাই সম্প্রতি আমরা দ্বিতল সড়কের ডিভাইডারের পরিবর্তে সড়কের পশ্চিম পাশে ফুটপাতের বাইরে রেলওয়ের জায়গায় র্যাম্প নির্মাণের জন্য নকশা করেছি। নতুন এই নকশা নিয়ে শীঘ্রই আমাদের সিডিএ চেয়ারম্যান মহোদয় চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধি ও অংশীজনদের সাথে বসবেন। সেখানে সবাই একমত হলেই এই নকশা চূড়ান্ত হবে।
তিনি আরো বলেন, নতুন র্যাম্পটি রেলওয়ের জায়গায় হবে। যা নির্মাণে রেলওয়ে থেকে প্রায় ৩৫ শতাংশ জায়গা আমাদের নিতে হবে। র্যাম্পের নকশা চূড়ান্ত হলেই আমরা রেলওয়ের কাছে জায়গা বরাদ্দের জন্য আবেদন করবো।
ইউসুফ চৌধুরী সড়কের ডিভাইডারের উপর দিয়ে গাছ কেটে র্যাম্প নির্মাণের নকশা করে সিডিএ। যা নিয়ে চলতি মাসের শুরুতে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আলোচনা-সমালোচনার পর দ্বিতল সড়কে র্যাম্প নির্মাণে গাছ না কাটার নির্দেশ দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। এক পর্যায়ে র্যাম্প নির্মাণ ও গাছ কাটার কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সিডিএ।
গাছ কেটে র্যাম্প নির্মাণের সংবাদ প্রকাশের পর চলতি মাসের শুরুতে নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন সংগঠন সমাবেশ করে সিডিএকে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত বাতিলের আহবান জানায়। নগরীর টাইগারপাস মোড়ে শতবর্ষী গাছের নিচে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশও করে বিভিন্ন সংগঠন। সিপিবি, বাসদ, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনও বিবৃতি দিয়ে একই আহবান জানায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৪ নভেম্বর নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৫ দশমিক ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রায় সাড়ে ৪ মাস আগে নগরীর দীর্ঘ ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন করা হলেও নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এখনো যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয়নি। বিমানবন্দর কেন্দ্রিক যানজট নিরসনে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে সিডিএ। তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। পরবর্তীতে যার ব্যয় বেড়ে হয় ৪ হাজার ২৯৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা।
জেএন/এমআর