ফিলিস্তিনের গাজায় মানবতার বিরুদ্ধে যত অপরাধ আছে সবই করছে ইসরায়েল। অঞ্চলটিতে ফিলিস্তিনি প্রজন্ম ধ্বংসে উঠেপড়ে লেগেছে দখলদাররা। তাদের বোমার আঘাতে অবিরাম শিশু ও নারী হত্যার খবর সবার জানা। এবার একটি জাতি ধ্বংসের আরও ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ্যে এল।
রয়টার্সের বুধবারের (১৭ এপ্রিল) প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বোমাতেই চার হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ভ্রুণ হত্যা করেছে নিষ্ঠুর ইহুদিবাদীরা। এ ছাড়া এক হাজারের বেশি শুক্রাণু ও নারীর নিষিক্ত ডিম্বানু ধ্বংস করা হয়েছে।
বোমাটি ফেলা হয় গাজার আল বাসমা আইভিএফ কেন্দ্রে। গত বছরের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের বোমার আঘাতে ওই কেন্দ্রের ফার্টিলিটি ক্লিনিক তছনছ হয়ে গেছে। এটি গাজার অন্যতম ও বড় ফার্টিলিটি ক্লিনিক ছিল।
ওই ভয়াবহ বিস্ফোরণে সেখানকার ভ্রূণবিদ্যা ইউনিটের এক কোণে সংরক্ষিত পাঁচটি তরল নাইট্রোজেন ট্যাঙ্কের ঢাকনা ফেটে যায়। সেখানে বিশেষ কৌশলে ভ্রুণগুলো সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের বৈশ্বিক স্বীকৃতি আদায়ে ফের বাধা
কিন্তু মুহূর্তে ট্যাংকের তরল বাষ্পীভূত হয়। ভেতরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। পরিস্থিতি তখন এতই ভয়াবহ ছিল যে, কোনোভাবেই ভ্রুণগুলো বাঁচানো যায়নি।
ইসরায়েলের এই হামলায় হত হওয়ার আগে হাজারো ভ্রুণ চিৎকার করতে না পারায় তা চাপা পড়েছিল। কিন্তু রয়টার্স বলছে, ওই হামলায় বেশ সফল হয় ইসরায়েল। কারণ, এর প্রভাব সুদূরপ্রসারী।
এর মানে হচ্ছে, অন্তত পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনি শিশু পৃথিবীতে আসার আগেই মারা গেল।
আইভিএফ ক্লিনিকটি ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন কেমব্রিজ-প্রশিক্ষিত প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ বাহেলদিন ঘালাইনি। তিনি বলেন, আমার হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। এই পাঁচ হাজার সম্ভাব্য জীবন ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্ব রাখে। এর মানে ওই সংখ্যক নিঃসন্তান দম্পতি আর কখনও মা-বাবা হতে পারবেন না।
এ ব্যাপারে জানতে রয়টার্স ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে।
জবাবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রেস ডেস্ক বলে, তারা প্রতিবেদনটি খতিয়ে দেখছে। ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক অবকাঠামো লক্ষ্যবস্তু করে না। তবে হামাস যোদ্ধারা চিকিৎসা সুবিধার আড়ালে সন্ত্রাসী কাজ করে। অথচ বিষয়টি হামাস বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
জেএন/এমআর