রাজীব প্রিন্স : ঈদের পর চট্টগ্রামে আবারও ঝাঁজ বেড়েছে পেঁয়াজে। কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে দেশি পেঁয়াজের দাম। রান্নায় বেশি ব্যবহার হওয়া পেঁয়াজের সাথে সাথে দেশি রসুন ও আদার দামও পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করেছে।
সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদের ছুটিতে টিসিবির কার্যক্রম ও প্রশাসনের তদারকি কম থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দাম ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আর বিক্রেতারা বলছেন, টানা ছুটিতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় এবং আমদানি বন্ধ থাকায় দাম কিছুটা বেড়েছে।
আবার কেউ কেউ বলছে ভারত থেকে পেঁয়াজের যোগান বন্ধ। ফলে সদ্য আবাদ হওয়া হালি পেঁয়াজ সংরক্ষণ শুরু হলে দাম যে বাড়বে, সে আভাস আগে থেকেই ছিল। সে হিসেবেই ঈদের পরই পেঁয়াজের খুচরা দাম কিছুটা বেড়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম নগরীর রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাইকারিতে প্রতিকেজি ৪৭ থেকে ৫৫ টাকায় আর খুচরায় ৫৫ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। দেশি পেঁয়াজ হলে দাম আরও বেশি।
বাজারের পাইকারি পেঁয়াজ বিক্রেতা আমিনুল জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন ৪২ থেকে ৪৭ টাকা কেজি দরে। আজ তা ৪৭ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে কাজির দেউরি বাজারে গিয়ে খুচরা বিক্রেতা রহিম উদ্দিদের কাছে পেঁয়াজ-রসুনের দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুচরাতে এক কেজি দেশি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, আমদানিকৃত পেঁয়াজের কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজি প্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আদা ও রসুনেও প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা বেড়েছে। খুচরায় দেশি ও চায়না আদা ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২শ টাকা কেজি দরে। চায়না রসুন এর দাম ২২০ টাকা।
বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা সাইমুন খালেদ ক্ষোভের সাথেই অভিযোগ তুলেন, প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই আজ দেশের এ অবস্থা। না হয়, ঈদ শেষ না হতেই বাজারে তরতর করে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে কেন?
তার ভাষ্য, ঈদের সময় প্রশাসন সক্রিয় ভুমিকা রাখায় মূল্য কিছুটা নিয়ন্ত্রণে ছিলো। এখন প্রশাসন ছুটিতে তাই সুযোগ বুঝে দামে খড়গ বসাচ্ছে অসাধু-মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা। যার যেমন খুশী দাম হাঁকছে বাজারে।
এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের যুক্তি, ভারতের রফতানি বন্ধের সুযোগ নিচ্ছে অসাধু চক্র। প্রান্তিকে কৃষকের সব পেঁয়াজ এক সাথে কিনে ‘রাখি’ হিসেবে সংরক্ষণ করছেন বড় বেনিয়ারা। সামনে দাম নিয়ন্ত্রণ করবেন তারাই। অনিয়ম এখনই না থামালে সামনে আরও বাড়বে পেঁয়াজের দর।
যদিও বিশ্বের অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। তবে, আমদানিতেও পিছিয়ে নেই। প্রতি বছর ভরা মৌসুমে ২৫ থেকে ৩০ ভাগ পণ্য নষ্ট হবার সুবাদে প্রতিবেশি ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করতে হয়।
আপাতত বেসরকারি খাতে সে সুযোগ নেই। তাতেই পেঁয়াজের দাম বাড়তির দিকে। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো, গত ১০ বছরে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বেড়েছে ১৫ লাখ টন।
জেএন/পিআর