চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতি (তৃমেসকস) থেকে বরাদ্দ পাওয়া ক্যান্টিন, গ্রোসারী শপ ও ফলের দোকান থেকে জোর পূর্বক ঠিকাদারকে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে।
বরাদ্দ পাওয়া ঠিকাদার মেসার্স আজিম স্টোরের মালিক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ, ভাড়া বাবদ অগ্রিম দেওয়া ৪৫ লাখ টাকা তাঁকে বুঝিয়ে না দিয়ে বেআইনিভাবে তাঁকে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এদিকে ঠিকাদারকে উচ্ছেদের বিষয়ে চট্টগ্রাম আদালতে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম আদালতের ৫ম সিনিয়র সহকারি জজ আদালতে মামলা নম্বর -৫৪/২০২৪ এর নথিসূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতির বিগত কমিটি হাসপাতালের পরিচালককে অনুরোধ করে হাসপাতালের সামনে ফাঁকা জায়গায় ক্যান্টিনের জন্য মূখীক অনুমতি নেন।
এরপর সমিতি পরিচালনাকারীদের ক্যান্টিন তৈরির জন্য পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় ঠিকাদার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের দ্বারস্থ হন। তিনি ২০২১ সালের ১৮ জুলাই থেকে বিভিন্ন কিস্তিতে ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই পর্যন্ত ৪০ মাসের অগ্রিম ভাড়া বাবদ ৯৯ লাখ ৩১ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। যা সমিতির রশিদপত্র ও প্যাডে ভাড়া হিসেবে স্বীকৃত হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে ২০২১ সালের ১ এপ্রিল থেকে মুদির দোকান, গ্রোসারি শপ ও ফলের দোকান ৯ মাস বন্ধ রাখা হয়। এতে ওই তিন প্রতিষ্ঠানের ভাড়া বন্ধ ছিল। ফলে ক্যান্টিনের ভাড়া কেটে মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম সমিতির কাছে পৌণে ৪৫ লাখ টাকা অগ্রিম পরিশোধিত ভাড়া পাওনা থাকেন।
মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৩ সালের নভেম্বর হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতির নির্বাচনে এস এম বশির উদ্দিন ও জাকির হোসেনের নতুন প্যানেল জয়ী হয়।
ক্যান্টিন পরিচালনাকারী জাহাঙ্গীর আলমের অভিযোগ, ওই বছরের ২৫ নভেম্বর বিকাল ৫ টায় সমিতির কার্যকারি কমিটির প্রায় ১৫ সদস্য তাঁর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
চাঁদা না দিলে ক্যান্টিন থেকে তাঁকে উচ্ছেদ করা হবে বলে জানিয়ে দেন। সর্বশেষ ২৮ ডিসেম্বর তাঁকে হত্যার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে তিনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সমিতির কার্যকরি কমিটি গত ২৪ জানুয়ারি তাঁকে সম্পন্ন বেআইনিভাবে ক্যান্টিন থেকে উচ্ছেদ করেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সমিতির সাথে লিখিত চুক্তি ছিল আমার ভাড়ার অগ্রিম টাকাগুলো যতদিন শেষ হবে না, ততদিন আমার কাছে ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব থাকবে। কিন্তু কব্জির জোর দেখিয়ে আমাকে উচ্ছেদ করা হয়। আমি বর্তমানে ৪৫ লাখ টাকা সমিতির কাছে পাওনা আছি। সেগুলো উদ্ধারে আদালতে মামলা দায়ের করেছি।
তৃমেসকস এর সাবেক সভাপতি সাদেকুর রহমান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, পূর্বের ঠিকাদরকে পাওনা বুঝিয়ে না দিয়ে জোরপূর্বক উচ্ছেদ অমানবিক। সমিতির আমাদের পূর্বের কমিটির প্রচেস্টায় তৈরি করা ক্যান্টিন, গ্রোসারী শপ ও ফলের দোকানের ভাড়া সমিতির ভোগ করছেন।
ক্যান্টিন তৈরিতে ঋণের বুঝাও বর্তমান কার্যকরী কমিটির উপর বর্তায়। এটা পরিশোধ না করা আইনের দৃষ্টিতে অন্যায়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণী সরকারি কর্মচারী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেএন/পিআর