চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলী খেলার ১১৫তম আসর আজ লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। এরই মধ্যে এ বলীখেলাকে ঘিরে চট্টগ্রামে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবের আমেজ।
তাছাড়া খেলাকে ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে বৈশাখী মেলা। বলী খেলায় অংশ নিতে প্রতি বছরের মতো এবারও আগ্রহীরা আয়োজক কমিটির কাছে নাম জমা দিয়েছেন। আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত আগ্রহীদের নাম গ্রহণ করা হবে। ইতিমধ্যে শতাধিক বলী নাম জমা দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বলী খেলা বেলা সাড়ে ৩টায় হওয়ার কথা থাকলেও তাপপ্রবাহের কারণে বলী খেলার মূল আসরের সময় এক ঘণ্টা পেছানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানালেন আবদুল জব্বার স্মৃতি কুস্তি প্রতিযোগিতা ও মেলা কমিটির সহ-সভাপতি চৌধুরী ফরিদ।
তিনি জানান, বিকেলে তাপপ্রবাহ কিছুটা কমলে সাড়ে ৪টার দিকে লালদীঘির ময়দানে বালুর মঞ্চেই বলী খেলা অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে শতাধিক বলী নাম জমা দিয়েছেন।
লালদীঘি ময়দানে অনুষ্ঠিত শতবর্ষী এই বলীখেলা আর বৈশাখী মেলা যে আয়োজনের জন্য এখনো উন্মুখ হয়ে থাকেন চট্টগ্রাম নগরসহ আশপাশের জেলা-উপজেলার বাসিন্দারা।
তাইতো আনুষ্ঠানিকতার তোয়াক্কা না করেই আগে থেকেই শুরু হয়ে গেছে বৈশাখী মেলা, চলছে বেচাকেনাও। রাস্তা-ফুটপাত জুড়ে বসেছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিক্রেতারা।
প্রখর রোদ আর গরম উপেক্ষা করে যাচ্ছেন ক্রেতারাও। বৈশাখী মেলার পরিসর শুরু হয়েছে নগরীর আন্দরকিল্লা মোড় থেকে। এরপর সেটা বক্সিরহাট বিট, লালদীঘির চারপাশ, কেসেদে রোড, জেলা পরিষদ চত্বর হয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা ছড়িয়ে গেছে।
এসব জায়গায় অস্থায়ী দোকান বানিয়ে ক্ষুদ্র বিক্রেতারা বাঁশ ও বেতের আসবাবপত্র, ঝাড়ু, ঝাটা, মাদুর, পাটি, পাখা, পাপোশ, কুলা, ঢালা, মোড়া, হরেক রকমের ঘর সাজানো কারুপণ্য, নানা ধরনের টব, শিশুদের খেলনা, হাড়ি-পাতিল, দা-বটি-খুন্তি, সাজের গয়না, বিভিন্ন গাছের চারাসহ নানারকম জিনিসপত্র নিয়ে বসেছেন। প্রচণ্ড গরমে হাত পাখার বিক্রিও চলছে বেশ।
অন্যদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের এ সময় জব্বারের বলী খেলার আয়োজন করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা মন্তব্য করা হচ্ছে।
কেউ বলেছেন, খেলার আয়োজন ও মেলা অব্যাহত থাকুক। আবার কেউ মন্তব্য করেছেন স্থগিত করা হোক কিংবা সবাইকে বিজয়ী ঘোষণা করা হোক।
তবে আয়োজক কমিটি বলছে, আসর বৃহস্পতিবারই হবে। মেলাও চলবে আগের মতো। বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।
মেলা সুষ্ঠুভাবে আয়োজনে সবধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বললেন মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী। তাপপ্রবাহের কারণে খেলা অনুষ্ঠানে কোনো সমস্যা হবে না।
উল্লেখ্য, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে বক্সিরহাট এলাকার আবদুল জব্বার সওদাগর নগরীর লালদীঘি মাঠে আয়োজন করেন এ বলীখেলা।
যা সময়ের পরিক্রমায় জব্বারের বলীখেলা নামে পরিচিত। প্রতিবছর বৈশাখের ১২ তারিখে লালদীঘি মাঠে এ বলীখেলা হয়।
জেএন/পিআর