চার মাসে ৩৬ শ্রমিক নিহত : এইচআরএসএস

অনলাইন ডেস্ক

দেশে নানা কারণে নির্যাতনের পাশাপাশি শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনাও বাড়ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গতকাল ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ১২৯ জন শ্রমিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৩৬ জন, আর আহত হয়েছেন ২১৩ জন।

- Advertisement -

কারখানা, বাসাবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও নৌপথে এসব ঘটনা ঘটেছে।

- Advertisement -google news follower

প্রতিটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা হয়েছে। তবে পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হয়নি। প্রায়ই শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহতের ঘটনা ঘটছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর পাশাপাশি মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এইচআরএসএসের তথ্যে জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ৯২টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় ২৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১২৮ জন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ৪৪ জন শ্রমিক মারা গেছেন। এ সময়ে সাতটি গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।

- Advertisement -islamibank

আহত হয়েছেন একজন। এ ছাড়া এপ্রিল মাসে ৩৭টি শ্রমিক নির্যাতনের ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১ জন শ্রমিক। এ সময়ে নির্যাতনে আহত হয়েছেন ৮৫ জন। এপ্রিল মাসে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাবে দুর্ঘটনায় ১৭ জন শ্রমিক মারা গেছেন।

সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের নদ্দা এলাকায় চোর সন্দেহে আটকের পর হাত-পা ও চোখ বেঁধে মারধর করে ছাদ থেকে ফেলে মো. শাকিল নামের এক রিকশা শ্রমিককে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

ওই দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে ছাদ থেকে ফেলে দিলে তিনি মারাত্মক আহত হন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুই দিন পর মারা যান। নিহত শাকিল মাঝেমধ্যে রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবেও কাজ করতেন।
এর আগে গত ১৮ এপ্রিল ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নে মন্দিরে আগুনের ঘটনার জেরে শ্রমিক আশরাফুল খান ও আসাদুল খানকে (আপন দুই ভাই) পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার এ ঘটনার পর দেশজুড়ে এখনো ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

ফরিদপুরে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখা। র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দুই শ্রমিক হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।

গত ১৮ জানুয়ারি গাজীপুরের শ্রীপুর সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি বেসরকারি কারখানায় নিহত হন নারগিছ আক্তার, রিফাত হাসান ও শিউলি আক্তার নামের তিন নারী শ্রমিক। তিন নারী শ্রমিকের মৃত্যুর পর ওই কারখানায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

চলতি বছর বাসায় গৃহকর্মী নির্যাতনে হত্যার অভিযোগও পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার বাইরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি বাসায় এক শিশু গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার করা হয়। শিশুটির বাবা সুমন মিয়ার দাবি, তাঁর মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মালিবাগ এলাকার একটি বাসার ছাদ থেকে পড়ে আনোয়ারা নামে এক গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়।

শ্রমিক নির্যাতন ও মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপতি তাসলিমা আখতার লিমা বলেন, ‘মে দিবসের শুরুটাই হয়েছিল রক্তপাতের মাধ্যমে। এখনো শ্রমিকরা হত্যা, নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। গত বছরও দাবি আদায়ে সোচ্চার হওয়া চার শ্রমিককে সড়কে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে। আমরা এসবের অবসান চাই।’

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM