ইউসেপ বাংলাদেশ বিগত ৫০ বছর যাবত সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি প্রশিক্ষণ ও শোভন কর্মসংস্থান তৈরিতে বাংলাদেশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় ঝরে পড়া শিশু- কিশোর, ও তারুণ্যের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের মহৎ উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক, সুহৃদ লিন্ডসে এ্যালান চেইনী ইউসেপ প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে ইউসেপ বাংলাদেশ হিসেবে এদেশে হাজারো তরুণ স্বপ্নবাজের স্বপ্ন-সারথি হয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। বর্তমানে দেশব্যাপী ইউসেপ বাংলাদেশ-এর ৮টি ভৌগলিক এলাকার সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে ৩৫ হাজারের অধিক শিশু-কিশোর ও যুবা সাধারণ শিক্ষা ও উন্নত কারিগরি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে।
আজ শুক্রবার (৩ মে) ইউসেপ চট্টগ্রাম রিজিওনের অন্তর্ভুক্ত কালুরঘাট এ. কে. খান ইউসেপ টিভিইটি কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ইউসেপ বাংলাদেশের ৫০ “বর্ষপূর্তি” উৎসব আয়োজিত হয়।
জমকালো এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এম পি, সভাপতিত্ব করেন ইউসেপ বাংলাদেশের বোর্ড অব গভর্ণরস এর সাবেক চেয়ারপার্সন ও এ. কে. খান ফাউন্ডেশন এর ট্রাস্টি সেক্রেটারী সালাউদ্দিন কাশেম খান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. মোঃ আবদুল করিম।
প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী ইউসেপ চট্টগ্রাম রিজিওনের আয়োজনে ইউসেপ বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তি উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণাপূর্বক এক বর্ণাঢ্য আনন্দ-র্যালীতে অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা পর্বে শিক্ষামন্ত্রী দক্ষ জন-সম্পদ তৈরিতে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে এক্ষেত্রে ইউসেপ বাংলাদেশের ভূমিকা অনুকরণীয় মডেল বলে মন্তব্য করেন।
স্বাগত বক্তব্যে ইউসেপ বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. মোঃ আবদুল করিম যুদ্ধবিদ্ধস্ত বাংলাদেশে সুবিধাবঞ্চিত পথ-শিশুদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তাদের শোভন কর্ম-সংস্থানে মানব হিতৈষী লিন্ডসে এ্যালান চেইনীর উদ্যোগকে দূরদর্শী ও সময়োপযোগী বলে আখ্যায়িত করেন। এসময় তিনি ইউসেপ প্রতিষ্ঠা ও এর বিকাশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৃষ্ঠপোষকতার কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণপূর্বক বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে কারিগরি শিক্ষার কোন বিকল্প নেই মর্মে মন্তব্য করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউসেপ বাংলাদেশের বোর্ড অব গভর্ণরস এর সাবেক চেয়ারপার্সন জনাব পারভীন মাহমুদ এফসিএ, স্থানীয় সাংসদ আবদুস ছালাম, অতিরিক্ত সচিব বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ড. নাজনীন কাওসার চৌধুরী, ইউসেপ বাংলাদেশের এসোসিয়েশন মেম্বার ও দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক, এ. কে. খান এন্ড কোম্পানির চেয়ারম্যান মি. এ এম জিয়াউদ্দিন খান।
মোঃ আকরাম হোসেনের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, ইউসেপ নিয়োগকর্তা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউসুফ, এসএম আবু তৈয়ব, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এ এফ এম ফেরদৌস, স্থানীয় কাউন্সিলর কাজী নুরুল আমিন মামুন, ইউসেপ বাংলাদেশের উপপরিচালক প্রকৌশলী জয় প্রকাশ বড়ুয়া, ইউসেপ চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক জনাব মাসুদ আলম প্রমুখ।
বক্তারা বাংলাদেশের যুবাদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে ইউসেপ বাংলাদেশের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারের চাহিদাপূরণ, সুবিধাবঞ্চিতদের ভাগ্য উন্নয়ন ও সর্বোপরি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি সাধনে ইউসেপ বাংলাদেশের ভূমিকা অনন্য-সাধারণ। বিগত পঞ্চাশ বছরের গৌরব ও লক্ষ্য ছোঁয়ার প্রেরণা নিয়ে কারিগরি। শিক্ষার উৎকর্ষ সাধন ও বেসরকারি পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে অসমান্য অবদান রাখার মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে ইউসেপ বাংলাদেশ।
জেএন/এমআর