মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহীদের হাতে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তাবাহিনীর আরও একটি প্রধান ঘাঁটির পতন হয়েছে।
এই ঘাঁটির দুই শতাধিক সেনাসদস্য বিদ্রোহী আরাকান আর্মির কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। ঘাঁটিটি বাংলাদেশ সীমান্তের বেশ কাছাকাছি অবস্থিত। রেডিও ফ্রি এশিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল সোমবার আরাকান আর্মি এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে বুথিডংয়ে অবস্থিত জান্তাবাহিনীর ১৫ নম্বর অপারেশনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টারের পতন হয়েছে এবং সেখানকার দুই শতাধিক সেনাসদস্য তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
মিয়ানমারে জান্তাবাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর একাংশের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি হয়েছিল অল্প কয়েক দিনের জন্য। ২০২৩ সালের শেষ দিকে সেই যুদ্ধবিরতি ভেস্তে যাওয়ার পর থেকেই আরাকান আর্মি রাখাইনে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে জান্তাবাহিনীর বিরুদ্ধে। সেই লড়াইয়ের সর্বশেষ ফলাফল জান্তার অপারেশনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টার দখল।
আরকান আর্মির ভাষ্য, তারা টানা ১২ দিন ধরে ১৫ নম্বর অপারেশনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টার দখলে লড়াই করে যাচ্ছিলেন।
অবশেষে, গত বৃহস্পতিবার সেই কমান্ডের পতন ঘটে এবং সেখানকার দুই শতাধিক সেনা আত্মসমর্পণ করে। আরাকান আর্মির প্রকাশ করা ভিডিও থেকে এই সেনাদের মধ্যে কয়েকজন রোহিঙ্গা মুসলমানকেও দেখা গেছে।
রাখাইনভিত্তিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যেসব সেনা আত্মসমর্পণ করেছে, তারা জান্তাবাহিনীর ৫৫১, ৫৫২, ৫৬৪ এবং ৫৬৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের সদস্য।
বিবৃতিতে আরাকান আর্মি বলেছে, ‘মার্চের ২৫ তারিখ থেকে ৩ মে পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে এসব ব্যাটালিয়ন আমাদের কাছে ধরা পড়ে।’
আরাকান আর্মির বিবৃতিতে অবশ্য কী পরিমাণ জান্তা সেনা তারা আটক করেছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। রাখাইনে জান্তাবাহিনীর মুখপাত্র হ্লা থেইনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন।
রাখাইনের বুথিডং শহরের ১৫ নম্বর অপারেশনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টার্সের অধীনে ১২টি সামরিক কাউন্সিল ব্যাটালিয়ন আছে। এর মধ্যে ১৫ নম্বর অপারেশনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টারসহ মোট পাঁচটি ব্যাটালিয়ন আত্মসমর্পণ করেছে।
গত বছরের নভেম্বর থেকেই আরাকান আর্মি রাখাইনে ব্যাপকভাবে জান্তাবাহিনীকে হারিয়ে এলাকা দখল করেই চলেছে।
এরই মধ্যে ৯টি টাউনশিপ দখল করেছে। বর্তমানে অ্যান, বুথিডং, মংডু ও কায়াকপায়ু শহরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আরাকান আর্মি।
জেএন/পিআর