চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠতে হবে। দেশকে বিশ্বের সামনে উপস্থাপনার জন্য শিশু কিশোরদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিকে নিজের মেধাকে বিকশিত করতে হবে। বিজ্ঞানমনস্ক জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে হলে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে পরিচিতি কওে দিতে চাই। প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্ভাবনের নামে হ্যাকার সৃষ্টি বা ধ্বংস্বাত্মক কার্যক্রম যাতে না হয় সে দিকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রযুক্তির মাধ্যমে পজিটিভ পরিবর্তন যাতে আসে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা ও শিক্ষা-দীক্ষায় বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠলে আগামী ২০৪১ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে পারবো।
৪৫তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উপলক্ষে আজ ৮ মে ইংরেজি বুধবার সকাল সোয়া ১০টায় চট্টগ্রাম নগরীর জামালখানস্থ ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত ২ দিন ব্যাপী ৪৫তম বিজ্ঞান মেলা, ৮ম বিজ্ঞান অলিম্পিয়াড ও ৮ম বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শুরুতে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বিজ্ঞান মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-‘ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, উদ্ভাবনেই সমৃদ্ধি’। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের তত্তাবধানে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। মেলায় ১০টি সরকারী বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বেসরকারী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা ৬০টি স্টলে তাদের নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রদর্শন করেন এবং অতিথিবৃন্দরা মেলার স্টল পরিদর্শন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, তথ্য প্রযুক্তিতে আমাদের দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা স্টিম এডুকেশন অর্থ্যাৎ সাইয়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথম্যাথিকস্ বিষয়ে পড়ালেখা করলে বিশ্বের যে কোন দেশ তাদের জন্য শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে উন্মুক্ত। তোমরাই গেøাবাল সিটিজেন। বিশ্বে সাইয়েটিস্টের অনেক চাহিদা রয়েছে। তাই পুঁথিগত জ্ঞান নয়, প্রযুক্তির মাধ্যেমে বিশ্বে টিকে থাকতে হলে স্কিল ডেভেলপ করতে হবে, বিভিন্ন দেশের ভাষা শিখতে হবে।
তিনি বলেন, পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার চিন্তা করলে সুনাগরিক হওয়া যাবে না। প্রযুক্তিগতভাবে স্কিল ডেভেলপ করতে পারলে আমরা উন্নত দেশ গড়তে পারবো। এখন আমাদের মাথাপিছু গড় আয় সাড়ে ৩ হাজার মার্কিন ডলার। আজ থেকে আগামী ১৭ বছর পর ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হলে আমাদের মাথাপিছু গড় আয় হবে সাড়ে ১২ হাজার মার্কিন ডলার। তাই কুসংস্কার থেকে দুরে থেকে বিজ্ঞান মনস্ক জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। নতুন প্রজন্মের হাতেই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ।
বিশেয় অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইয়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি ও দেশ দারিদ্র্যমুক্ত হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থীদের নতুন প্রজন্মের প্রতি পড়ালেখার পাশাপাশি বিজ্ঞানের ওপর আরো বেশি চর্চা ও গবেষণার আহবান জানান। বর্তমানে বিজ্ঞান প্রযুক্তির বিশ্বে টিকে থাকতে হলে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের ওপর আরো বেশি লেখাপড়া, চর্চা ও গবেষণা করতে হবে। কেননা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিজ্ঞানের ওপর ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শিক্ষা বিস্তারে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। আমাদের প্রযুক্তি নির্ভর ও উন্নয়নমনষ্ক হতে হবে। আগামী বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে এই শিক্ষার্থীরাই নেতৃত্ব দিবে। এই মেলা থেকে শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেদেরকে তৈরি করতে সক্ষম হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহিদ ইশরাকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান মেলার আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইয়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোঃ সাদি উর রহিম জাহিদ ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন নগরীর জামালখানস্থ ডা. খাস্তগীর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও.এফ,এম ইউনুছ।
জেএন/এমআর