চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পাঠানটুলী চাট্টশ্বরাই গায়েবী মসজিদের দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরমে পৌছেছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। মসজিদ পরিচালনায় কাউন্টার কমিটি ঘোষণা করেছে উভয় পক্ষ। এতে রক্তারক্তির আশঙ্কা করছেন সাধারণ মুসল্লীরা।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের পাঠানটুলী এলাকায় অবস্থিত চাট্টশ্বরাই গায়েবী মসজিদ একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। ওই মসজিদে দেশের দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে দান,সদকা করে থাকেন। মাসে লাখ, লাখ টাকা মসজিদের দানবাক্সে জমা হয়। দানের টাকায় ৬ তলা আধুনিক মসজিদ নির্মাণ করে পরিচালনা কমিটি। বর্তমানে মসজিদের ফান্ডে প্রায় ৬৪ লাখ টাকা জমা রয়েছে। মাসে ৫/৬ লাখ টাকা দানবাক্সে পাওয়া যায়।
অভিযোগ উঠেছে, মসজিদের বিপুল পরিমাণ টাকার উপর চোখ পড়েছে কয়েক ব্যক্তি-মহলের। মূলত মসজিদের টাকা তছরুপ করতে মসজিদ পরিচালনা কমিটি দ্বিভাজন করে ফেলেছেন।
জানা গেছে, বর্তমানে চাট্টশ্বরাই গায়েবী মসজিদ পরিচালনায় পৃথক দুটি কমিটি রয়েছে। দুটি পক্ষই নিজেদের কমিটিকে বৈধ কমিটি বলে দাবি করছেন। এরমধ্যে মোতয়াল্লী রিয়াজ আহাম্মদ খান রাজু সমর্থিত মসজিদ পরিচালনা কমিটি গত ১৯ জানুয়ারি নির্বাচনের মাধ্যমে ২০২৩-২০২৭ মেয়াদের জন্য গঠন করা হয়। এতে ২৩ নং ওয়ার্ডের সাবেক চসিক কাউন্সিলর নিয়াজ মোহাম্মদ খানকে সভাপতি করে সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে। এছাড়া ওই কমিটি গঠনতন্ত্র সংশোধনীর ১৬ ধারা অনুযায়ী ২ মে’ ওয়ারিশ কমিটি ৯ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে। এতে প্রধান উপদেষ্টা করা হয় ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ জাবেদ।
এদিকে মোতয়াল্লী রিয়াজ আহাম্মদ খান রাজুর নেতৃত্বাধীন কমিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে গত ১০ মে মোতয়াল্লী কামরুল হুদা খানের নেতৃত্বে ১ বছরের জন্য ( ৯ মে ২০২৫ মেয়াদ পর্যন্ত) একটি আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এতে আহবায়ক করা হয়েছে হাজী আসাদ খানকে। এছাড়া সদস্য রাখা হয়েছে ৩৬ জনকে।
স্থানীয়রা জানান, এক মসজিদে দুই পরিচালনা কমিটির রশি টানাটানিতে গত সপ্তাহে মসজিদের দান বক্স খোলা হয়নি। প্রবল বর্ষণের পানিতে মসজিদের দানবাক্সে রক্ষিত প্রায় ৫ লক্ষ টাকা নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি জুমাতে দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নেওয়ায় মসজিদের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উভয় পক্ষ মারমুখী অবস্থান করায় সম্প্রতি মসজিদে মুসল্লী কমে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দুই পক্ষ মারমুখী অবস্থান করায় যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে।
একাধিক মুসল্লী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, মসজিদ পরিচালনা নয়,মসজিদের টাকা তছরুপ করতেই এ দ্বন্দ্ব। তারা মসজিদটি পরিচালনায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জেএন/এমআর