প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগ

কৃষকলীগ নেতা সুমনের প্রশ্রয়ে রাউজানে জালালের অপরাধ স্বর্গরাজ্য!

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সহ-সম্পাদক মো. জালাল। রাউজান উপজেলার ১নং হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর সর্তায় তার গ্রামের বাড়ি। সে স্থানীয় তোতা গাজীর বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে।

- Advertisement -

চট্টগ্রাম শহরে ছাত্রদল নেতা হলেও নিজ এলাকায় পরিচয় দেন সরকার দলীয় অঙ্গ সংগঠনের কর্মী হিসেবে। আর তার এ প্রচেষ্ঠায় সার্বিক সহযোগীতা করছেন রাউজান কৃষক লীগের শীর্ষ নেতা মো. জিয়াউল হক সুমন (প্রকাশ টাকলা সুমন)।

- Advertisement -google news follower

সুমনের আশির্বাদ পুষ্ট হয়ে ইতিমধ্যে রাউজানের হলদিয়ায় অপরাধের স্বর্গ রাজ্য গড়ে তুলেছেন মো. জালাল। রীতিমতো সরকারী দলের নাম ভাঙ্গিয়ে অভিনব প্রতারণার জাল বিছিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা।

জানা গেছে, জালাল উপজেলার হলদিয়ায় গরু ব্যবসার নামে অনেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছে কয়েক কোটি টাকা। একাধিক ভুক্তভোগী আদালতে এই সংক্রান্ত মামলাও করেছেন।

- Advertisement -islamibank

রাউজানে জালালের প্রতারণার শিকার নাসির উদ্দিন ও ফটিকছড়ির মোকাররম হোসেন বলেন,” জালাল ব্যবসা করার নাম করে, গত কুরবানির ঈদে আমাদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নেয়।

আমরা পাওনা টাকা চাইতে ওর বাড়িতে গেলে দেখতে পাই সকল অপকর্মের পেছনে জালালকে মদদ দিচ্ছে সুমন ও মো. রফিক প্রকাশ ট্যারা রফিক। স্থানীয় প্রভাবশালী এসব নেতাদের ভয় দেখায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন এই প্রতিবেদককে বলেন, টাকলা সুমন, ট্যারা রফিক ও ইয়াবা জালাল সংঘবদ্ধ হয়ে হলদিয়া ইউনিয়নে কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপারাধকর্মের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

জালালের অপকর্মে কেউ বাধা দিলে কিশোর গ্যাং পাঠিয়ে সাধারণ মানুষদের মারধর ও ইয়াবাসহ চালান করে দেওয়ার হুমকি এবং চাঁদা দাবি করেন। ফলে ভয়ে সাধারণ লোকজন মুখ খুলতে চাই না।

গত ২০২৩ সালে চট্টগ্রাম নগরীতে তিনটি নাশকতা ও রাউজানের একটি হত্যাচেষ্টার মামলায় গত ১৫ মার্চ পুলিশ জালালকে গ্রেফতার করার পর কেউ কেউ তার অপকর্মের বিষয়ে মুখ খুলতে শুরু করে।

তবে আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশে যেকোন সময় জালাল জেল থেকে বেরিয়ে ফের নির্যাতন করতে পারেন বলেও ভয়ে রয়েছেন অনেকে।

এলাকাবাসীরা জানান, জালাল এক সময় চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানা এলাকায় বসবাস করতেন। তবে রাউজানের ছেলে হওয়ায়, সাকা চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরীর সাথে তার বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিলো। সেই সুবাদে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের কমিটিতে সহ-সম্পাদকের পদও পেয়ে যান জালাল।

গত ২০২৩ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খান এলাকায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিসহ একাধিক স্থাপনায় ভাংচুর চালায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীরা। সেই ঘটনায় নগরীর কোতোয়ালি থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার ভুক্ত ১৮ নং আসামি হন মো. জালাল।

উক্ত ঘটনার পরপরই রাউজানে আত্মগোপনে চলে যান তিনি। সেখানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগ পরিচয় দিয়েই চালিয়ে যান নিজের ইয়াবা ব্যবসাসহ সকল অপকর্ম। অবৈধ গরু ব্যবসার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় টাকা।

রাউজান উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক সুমন প্রকাশ ওরফে টাকলা সুমনের সাথে নিয়মিত সর্বত্র বিচরণ ছিল জালালের।

এ বিষয়ে কৃষকলীগ নেতা সুমনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জালাল আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে আসতো এবং বিগত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর হয়ে কাজ করেছে। আমার সাথে তার কোনো ঘনিষ্ঠতা নেই।

এদিকে সুমন নিজেও বিএনপির কর্মী ছিলেন মন্তব্য করে হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সুমন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলে আমিই প্রথম জানতাম। কারণ আমি ১৫ বছর যাবৎ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। বরং তার মদদে জালাল গরু ব্যবসার নামে বিভিন্ন মানুষের টাকা আত্মসাৎ করার সুযোগ পেয়েছে।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM