বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ও তার আওতাধীন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কমিটি গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এখনো পর্যন্ত যেসব ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কমিটি গঠন হয়নি জুলাই মাসের মধ্যেই এগুলোর সম্মেলন ও কমিটি গঠন অবশ্যই করে ফেলতে হবে।
আগস্ট মাস যেহেতু শোকের মাস, এসময় আওয়ামী লীগের কোনো স্তরের সম্মেলন ও কমিটি গঠনের অবকাশ নেই। সেপ্টেম্বর মাসকে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পর্ব হিসেবে ধরে নিয়ে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী অক্টোবর মাসে নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে আড়ম্ভরপূর্ণভাবে মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
দলীয় সভাপতির নির্দেশে আগামী অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন আয়োজন করা হবে বলে জানান হানিফ।
রবিবার (১৯ মে) চট্টগ্রামের একটি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।
কার্যকরী কমিটির সভায় তিনি বলেছেন, ‘নবীণ-প্রবীণের সমন্বয়ে সম্মেলনের মধ্যদিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কাঠামোর ভিত্তিকে সুদৃঢ় ও বিস্তৃত করার প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করে দিতে হবে।
নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা, যোগ্যতা ও দক্ষতাকে প্রাধান্য দিতে হবে। নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে।
এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা সাংগঠনিক শৃঙ্খলার মধ্যেই হওয়া উচিত। নেতৃত্ব নির্বাচনে ভোটের বিষয়টি থাকলে কেনাবেচা হওয়ার সুযোগ থাকে এবং পারস্পরিক বিভক্তি সৃষ্টিরও আশঙ্কা দেখা দেয় বলে মন্তব্য করেন হানিফ।
সভায় তিনি আরও বলেন, বৈরী সময় ও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস ও চিরতরে নিশ্চিহ্ন করার গভীর ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা হলেও শুধু সাংগঠনিক কাঠামোর সুদৃঢ় ও শক্তিশালী ভিত্তির কারণে আওয়ামী লীগ টিকে আছে ও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে।
গ্রিক পুরাণের মিথ ফিনিক্স পাখির মতো ছাইভস্মের মধ্যেও বার বার প্রাণ ফিরে পেয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের ক্ষমতার উৎস যেমন জনগণ আওয়ামী লীগের ভিত্তি ও অস্তিত্ব নির্ভরশীল শক্তিশালী সাংগঠনিক ভিত্তির উপরই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেছেন, আওয়ামী লীগ টানা চারবার ক্ষমতায় আছে- এ নিয়ে আত্মতুষ্টির কোনো কারণ নেই।
২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ব্যাপক বিজয় অর্জিত হয়েছিল প্রবল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এই প্রতিপক্ষ ছিল নেতৃত্বহীন বিএনপি নামক একটি প্লাটফর্ম এবং স্বাধীনতা ও দেশ বিরোধী রেজিমেন্টাল জামায়াতে ইসলামী ও প্রতিক্রিয়াশীল ডান ও অতিবাম শক্তির মোর্চা।
কিন্তু পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনগুলোতে আমাদের কোনো প্রবল প্রতিপক্ষ না থাকলেও দলীয় সাংগঠনিক ভিত্তি খুব একটা শক্তিশালী হয়নি। বরং নিজেদের মধ্যে কলহ, বিবাদ ও বিভক্তি বেড়েছে। আরো বেড়েছে দলের মধ্যে হাইব্রিডের প্রবল স্রোত।
প্রধানমন্ত্রী বার বার বলেছেন, নিজস্ব গ্রুপ ও প্রভাব বলয় বৃদ্ধির জন্য বাইরে থেকে ভিন্ন মতের মানুষ দলে ঢোকানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, অ্যাডভোকেট মো. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, এম. জহিরুল আলম দোভাষ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলমসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
জেএন/পিআর