চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫-তম জন্মবার্ষিকী ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আজ ২৫ মে শনিবার বিকেলে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোঃ আনোয়ার পাশা। মূখ্য আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নেছার উদ্দিন আহমদ, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এস.এম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সরওয়ার কামাল ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুর উদ্দিন।
আলোচনা সভা শেষে সাংস্কৃতিক পর্বে কবিতা, গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনাদর্শ তুলে ধরেন এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তাঁর অবদানের কথা উল্লেখ করেন। এছাড়াও বক্তারা নজরুলের অসাম্প্রদায়িক জীবনাদর্শ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
বক্তারা আরও বলেন, জাতীয় কবি নজরুল দরিদ্র পরিবারে জন্ম নিয়েও ছিলেন অসাম্য, অসুন্দর ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে অক্লান্ত বিদ্রোহী চির উন্নত শির। বাংলা কাব্যে এক নতুন যুগের সৃষ্টা নজরুল পরাধীন ব্রিটিশ ভারতে মুক্তির বাণী বয়ে এনেছিলেন তাঁর কাব্যে। সূচনা করেছিলেন এক নতুন যুগের। অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশী আর ভাঙ্গার গান ‘যৌবনের জয়গান’ গেয়ে জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি গোটা উপমহাদেশের মানুষকে। ১৯২১ সালে ‘বিদ্রোহী’ কবিতা লিখে সে সময়ে ব্রিটিশ শাসনের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছেন। ব্রিটিশ বিরোধী কবিতার জন্য করেছিলেন কারাবরণ। কিন্তু কখনোই ঔপনিবেশিক শাসনের কাছে মাথা নত করেননি। ঔপনিবেশিক শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তির জন্য উজ্জ্বীবিত করতে বারবার গেয়েছেন বলবীর, বল উন্নত মম শির। শির নেহারি আমারি নতশির, ওই শিখর হিমাদ্রির।’
বক্তারা বলেন, বাংলা গানের জগতে নজরুল সুর ও বাণীর ক্ষেত্রে ঘটিয়েছেন এক অনন্য বিপ্লব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ২৪ মে কাজী নজরুল ইসলামকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কবিকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদান করে ঘোষণা করা হয় জাতীয় কবি হিসেবে। ১৯৭৬ সালে মৃত্যু বরণ করলে কবিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাধিস্থ করা হয়। মৃত্যুর আগে তিনি লিখেছিলেন-“মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই, যেন গোরে হতে মুয়াজ্জিনের আযান শুনতে পাই”।
জেএন/এমআর