চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ১২টি জলদস্যু বাহিনীর মোট ৫০ জন সদস্য অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেছেন।
এদের মধ্যে ৪৯ জন পুরুষ এবং ১ জন মহিলা। এই ৫০ জনের মধ্যে তিনজন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত জলদস্যু।
এসব জলদস্যুরা ৩৫টি একনলা বন্দুক, ১৮টি এসবিবিএল, ১৭টি ওয়ান শ্যুটারগান, ১টি দুইনলা বন্দুক, ১টি পিস্তল, ১টি রিভলভার, ৩টি বিদেশি পিস্তল, ১টি এসএমজি, ২টি এয়ারগানসহ মোট ৯০টি অস্ত্র জমা দিয়েছেন। তাছাড়া তাদের হেফাজতে থাকা ২৮৩ রাউন্ড গুলি ও কার্তুজ এবং ৪টি ওয়াকিটকিও জমা দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার র্যাব-৭ পতেঙ্গা কার্যালয়ের এলিট হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কাছে জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করবেন। র্যাব-৭, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধানে তারা আত্মসমর্পণ করছেন।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক ( মিডিয়া) মোঃ শরীফ-উল- আলম বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের ৫০ জন জলদস্যু অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর নিকট আত্মসমর্পণ করবেন।
তিনি বলেন, র্যাবের চট্টগ্রাম ইউনিটের উদ্যোগে এর আগে ২০১৮ এবং ২০২০ সালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলের ৭৭ জন জলদস্যু আত্মসমর্পণ করেছিল।
এটি অন্যান্য জলদস্যুদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। একপর্যায়ে চট্টগ্রামে বাঁশখালী এবং কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া অঞ্চলের জলদস্যুরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আশার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম র্যাব তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকল অস্ত্র-গোলাবারুদসহ সদলবলে র্যাব-৭, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয়ের নিকট আত্মসমর্পণের ফলে বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপকূলীয় অঞ্চলে দস্যুতায় নিয়োজিত অন্যান্য জলদস্যু ও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরাও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে দারুণভাবে উৎসাহিত হবে।
র্যাব-৭ কর্মকর্তারা বলছেন, আজকে পর্যন্ত র্যাব-৭ এর নিকট বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া অঞ্চলসহ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের ৩৪২ জন কুখ্যাত জলদস্যু এবং অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে আটক করে।
এ সময় দেশী-বিদেশি মিলিয়ে সর্বমোট ২,৬০৩টি বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রসহ ২৯,১২৩ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে।
২০১৮ সালের গত ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এতে অত্র অঞ্চলের জলভাগে দস্যুতার ঘটনা কমে গেছে।
চট্টগ্রাম র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে জলদস্যুদের আত্মসমর্পণ পরবর্তী অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর, পতেঙ্গ) আসনের সংসদ সদস্য এম আব্দুল লতিফ, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, র্যাব ফোর্সেসের মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি এম খুরশীদ হোসেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম, র্যাব ফোর্সেসের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) কর্নেল মো. মাহাবুব আলম ও চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা।
জেএন/পিআর