হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন এক সময়ের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী সীমানা। দিন দিন তার শারীরিক অবস্থান অবনতি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তার পরিবার।
বলা হচ্ছে, মস্তিকে রক্তক্ষরণ জনিত কারণে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হার্ট অ্যাটক বা স্ট্রোক যে কোন সময় যে কারও আসতেই পারে।
কিন্তু তার পেছনে কোন না কোন কারণ তো থাকেই। অতিরিক্ত মানসিক চাপ সহ্য করতে না পারলেও এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়।
জানা গেছে, সীমানা সর্বশেষ ১০ দিন ধরে হাসপাতালের বিছানায় শয্যাশায়ী। কবে তার জ্ঞান ফিরবে, সে ব্যাপারে এখনই কিছু জানা যাচ্ছে না। এর মধ্যে একটি অস্ত্রোপচারও হয়েছে। দিনের পর দিন মাকে এভাবে বিছানায় দেখে হতবাক তার ছোট্ট ছেলেটা।
বারবার মায়ের কাছে ফিরতে চাইছে ছেলে আকাইদ সাজ্জাদ শ্রেষ্ঠ। মা কেন চোখ খুলছে না, কেন কথা বলছে না, কখন মায়ের বুকে ঘুমাতে পারবে- এসব প্রশ্ন তার।
মায়ের জন্য ক্ষণে ক্ষণে চিৎকার করে কাঁদছে ছেলে। এমন চিৎকারের কান্না পরিবারের কেউ সহ্য করতে পারছেন না। সবাই তার মায়ের সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন।
সীমানার দুই সন্তান। বড় সন্তান শ্রেষ্ঠর বয়স আট বছর, আর ছোট সন্তান স্বর্গ তিন বছর বয়সী। পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, ছোট ছেলে এখনো বুঝতে পারছে না তার মায়ের কী হয়েছে। কিন্তু বড় ছেলে মা যে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, তা ভালোভাবেই বুঝতে পারছে। কিন্তু মাকে এভাবে দেখতে পারছে না সে।
চিকিৎসকদের বরাতে সীমানার পরিবারের সদস্যদের ভাষ্য, ‘অলৌকিক যদি কিছু ঘটে তাহলে হয়তো একটা কিছু হবে। এই মুহূর্তে অবস্থাটা মোটেও ভালো কিছু না। আমরা শুধু প্রার্থনা করছি। সবার কাছে সীমানার সুস্থতার জন্যও দোয়া চাইছি।’
সীমানার এতো কম বয়সে এই পরিণতির কারণ কি? সে ইঙ্গিতই দিয়েছেন দেশের আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী দীপা খন্দকার। এই অভিনেত্রী সীমানার একটি ছবি পোস্ট করে আজ লিখেছেন নারীদের জীবনের কিছু অপ্রিয় সত্য।
দীপার ভাষ্য, মানুষ জীবনে একটু আরাম, একটু মানসিক শান্তি, একটু ভালোবাসা, প্রিয় মানুষের কাছ থেকে একটু যত্ন চায়। বাবা মায়ের আদরের সন্তান বড় হয়ে যখন নিজে জীবনযাপন করা শুরু করে তখন সবার ভাগ্য তো আর সহায় হয় না।
ভালোবাসার মানুষ যখন অচেনা শত্রুর মতো আচরণ করে, মানসিকভাবে তিলে তিলে মেরে ফেলে তখন সীমানার মতো এমন একটা ঘুম দিতে খুব ইচ্ছা করে।
দীপা আরও লিখেছেন, ‘কিন্তু জীবন এতোটাই নির্মম, এই ঘুম দেয়ার অধিকারও নাই। অধিকার তুমি হারিয়েছো, যেদিন তুমি মা হয়েছো। এখনতো ঘুমালে আর চলবে না। উঠে দৌঁড়াতে হবে রেসের ঘোড়ার মতো! না হলে মরে গিয়েও মনে হবে দায়িত্বতো শেষ করলাম না। যাবার অধিকার কে দিল? ওয়েক আপ এন্ড ফাইট মাই ডালিং।’
দীপার স্ট্যাটাসে ইঙ্গিত মিলছে সীমানার সঙ্গে কি ঘটেছে সে ব্যাপারে। সীমানা ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন সঙ্গীতশিল্পী পারভেজকে।
সংসারটা গুছিয়ে করার জন্য ক্যারিয়ারের ব্যস্ততম সময়ে বিরতি নিয়েছিলেন। তার ৮ বছরের সন্তানও রয়েছে। তবে এখন সীমানা আর পারভেজের সম্পর্ক কেমন না মিডিয়াতে সেভাবে আসেনি।
প্রসঙ্গত, সীমানা ২০০৬ সালে লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে কাজ শুরু করেন। ‘দারুচিনি দ্বীপ’ সিনেমায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন তিনি।
পরে নাটকেও অভিনয় শুরু করেন। কিন্তু হঠাৎ ২০১৬ সাল থেকে অভিনয়ে বিরতি। পরে জানা যায়, মা হওয়ার জন্যই এই বিরতি।
জেএন/পিআর