চট্টগ্রামের সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন তেল-গ্যাস সংকটে ধুঁকছে

অনলাইন ডেস্ক

জ্বালানি তেল ও গ্যাস সংকটেরে কারণে এই মুহূর্তে শোচনীয় পর্যায়ে রয়েছে চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন ধুঁকে ধুঁকে চলছে। প্রায় ৩ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ২৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এখন মিলছে মাত্র ১ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। যা সরাসরি জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে।

- Advertisement -

শনিবার (১ জুন) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী অশোক কুমার চৌধুরী।

- Advertisement -google news follower

তিনি বলেন, তেল ও গ্যাস নির্ভর সরকারি-বেসরকারি সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে। সবগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন অনেকটা কমেছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের পিডিবির পাশাপাশি প্রাইভেট বেশির ভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র তেল ও গ্যাস নির্ভর। প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে উৎপাদন একটু কম হচ্ছে। আমাদের পিডিবির শিকলবাহা, দোহাজারী এবং হাটহাজারী কেন্দ্রগুলো চালু আছে। রাউজান গ্যাসের কারণে বন্ধ আছে, এটি দুই-একদিনের মধ্যে চালু হবে।

- Advertisement -islamibank

তিনি জানান, চট্টগ্রাম থেকে গতকাল শুক্রবার প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। তার মধ্যে মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বাঁশখালী থেকে ১২০০ মেগাওয়াটের মতো পেয়েছি। সবগুলো বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামে ২৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে এই মুহূর্তে উৎপাদনের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে মাতারবাড়ি ও বাঁশখালী কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুটি। প্রাইভেট অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন কমে আসছে। ফলে চট্টগ্রামে শনিবার সকাল থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানা গেছে, পিডিবির নিজস্ব এবং প্রাইভেট মিলে চট্টগ্রামে ২৯টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে ১৩টি পিডিবির নিজস্ব বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অবশিষ্ট রয়েছে ১৬টি প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্র। সবকটি কেন্দ্র থেকে শুক্রবার ১ হাজার ৪৭৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের তথ্য মিলেছে।

পিডিবির রাউজান তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২১০ মেগাওয়াটের দুটি কেন্দ্র গ্যাসের কারণে বন্ধ। কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ৩০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট চালু রয়েছে। ৩টি ইউনিট বন্ধ। শিকলবাহা ২টি কেন্দ্রের মধ্যে একটি বন্ধ। ২২৫ মেগাওয়াটের কেন্দ্রটি থেকে মাত্র ১৪৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

দোহাজারী ও হাটহাজারী ২টি পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট থেকে ৮০ থেকে ৮৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। প্রাইভেট বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে জুলধা ৩০০ মেগাওয়াট থেকে মাত্র ৮৫ মেগাওয়াট, ১০৫ মেগাওয়াটের শিকলবাহা বারাকা থেকে ৭৯ মেগাওয়াট, ১১০ মেগাওয়াটের বারাকা কর্ণফুলী থেকে মাত্র ৬ মেগাওয়াট, ৩০০ মেগাওয়াটের ইউনাইটেড থেকে নাম মাত্র ৫২ মেগাওয়াট, ১১৬ মেগাওয়াটের আনলিমা থেকে ৫০ মেগাওয়াট, ১৬২ মেগাওয়াটের মীরসরাই বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ৫৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

মাতারবাড়ি ৬০০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে এখন প্রতিদিন গড়ে ৫৬৪ থেকে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। অপরদিকে, বাঁশখালী এস এস পাওয়ারের ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে ৪০০ থেকে সাড়ে ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, জ্বালানি তেল সংকটে চট্টগ্রামের বেশিভাগ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (সরকারি-প্রাইভেট) উৎপাদন ঠিক রাখতে পারছে না। দিনদিন জ্বালানি তেল সংকট প্রকট হয়ে উঠছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সামনে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি আরো শোচনীয় হয়ে উঠবে।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM