ঝিনাইদহের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার পর তার লাশ গুমের জন্য লাশের টুকরোগুলো নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যাওয়া এবং গাড়ি বদল করে সেগুলো গুমের কাজটি করেছেন নেপাল পুলিশের হাতে আটক সিয়াম ও জিহাদ হাওলাদার। এছাড়া সিয়াম তদন্তকারী কর্মকর্তাকে বিভ্রান্ত করতে আনারের ব্যবহৃত মোবাইলের চারটি সিম থেকে কলও দিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে নেপাল থেকে ফিরে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
অপরাধীরা বাংলাদেশে অপরাধ করে নেপাল চলে যায়। সিয়ামও দেড় মাস আগে গিয়েছিলেন দাবি করে হারুন বলেন, বাংলাদেশ থেকে অপরাধ করে অনেক হত্যা মামলার আসামি বাংলাদেশ থেকে কাঠমান্ডু চলে যায় অথবা দিল্লি থেকেও কাঠমান্ডু যায়। তারা সেখানে গিয়ে থেকে যায়। এ দেশটিকে তারা রুট হিসেবে ব্যবহার করে। আনার হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী মূল মদদদাতা আকতারুজ্জামান শাহীন ঢাকা থেকে দিল্লি, আবার দিল্লি থেকে কাঠমান্ডু গিয়ে অবস্থান করেছেন। আবার আরেকজন আকতারুজ্জামান শাহীনের যে সহচর সিয়াম সেও এক দেড় মাস আগে কাঠমান্ডু গিয়েছিল।
জিহাদ ও সিয়াম লাশের আলামত নষ্ট করেন জানিয়ে তিনি বলেন, লাশটি গুম করার উদ্দেশে জিহাদ ও সিয়াম বিভিন্ন জায়গায় আলামত নষ্ট করা, আলামত ফেলে দেওয়া, ডিসক্লোস করা, গাড়ি থেকে গাড়ি বদলানোর কাজটি করেছে। তদন্ত কর্মকর্তার দৃষ্টিভঙ্গি চেঞ্জ করার জন্য সে (সিয়াম) ওই মোজাফফরাবাদে চারটি সিম দিয়ে কল দিয়ে অবস্থান নিশ্চিত হয়ে কাঠমান্ডু চলে গেছে।
নেপাল পুলিশের সাথে কী কথা হয়েছে- জানতে চাইলে হারুন বলেন, অনেক অপরাধী বাংলাদেশ থেকে অপরাধ করে কাঠমান্ডু চলে যায়। সেই কারণে আমরা আপনাদের বলেছিলাম, আমরা নেপাল যাব। তারা সেখানে কোথায় থাকে, কী করে এবং আমরা সেখানে কলকাতার পুলিশকে নিয়ে সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছি। মূল যে ঘাতক শিমুল ভূঁইয়া আমাদের তথ্য দিলেন যে, সিয়াম নেপালে আছে, তখনই কিন্তু আমরা ২৫ মে বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করি। পরে পুলিশ সদর দফতর আবার সেটি নেপালের এনসিবিকে জানায়। আমাদের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কিন্তু কাঠমান্ডু পুলিশ সিয়ামকে গ্রেফতার করেছে। এটা আমাদের আন-অফিসিয়ালি জানানো হয়েছে। তারপর আমরা সেখানে গিয়ে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছি, কাঠমান্ডু পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তার সাথে আমরা কথা বলেছি। তাদের সাথে আমাদের ইনট্রেকশন হয়েছে।
হারুন আরও বলেন, আমরা তাদের বলেছি, কিছু অপরাধী বাংলাদেশে মানুষকে জিম্মি করে এখানে টাকা নিয়ে আসে। এই বিষয়গুলো একটু আপনাদের দেখভাল করতে হবে। তারা আমাদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে হেল্প করেছে। এখন থেকে কাঠমান্ডু গিয়ে যে অপরাধীরা সেখানে স্বর্গরাজ্য বানাবে, সেফ হোম বানাবে, সেটা আর করতে পারবে না। এই বার্তা তারা পেয়েছে।
জেএন/এমআর