নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে ট্রেনের ভেতর জানালার পাশে দাঁড়ানো নিয়ে তর্কের জেরে এক যাত্রীর এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষিতে ঝুমুর কান্তি বাউল (৫২) নিহত হয়েছেন। অভিযুক্ত যাত্রীকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে গ্রেফতার করেছে রেলওয়ে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে নরসিংদী রেলস্টেশনের চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ঢাকা মেইল ট্রেনের ভেতরে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যাত্রী ঝুমুর কান্তি বাউল নরসিংদী শহরের বীরপুরের এলাকার প্রত্যুত কুমার বাউলের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সকালেও তিনি ঢাকায় যাচ্ছিলেন। অপরদিকে অভিযুক্ত যাত্রী চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের মরহুম হাফেজ মিয়ার ছেলে মনজুর আহমেদ (৫৫)।
ট্রেন যাত্রীরা জানায়, বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী ঢাকা মেইল ট্রেনটি ছেড়ে আসে। পরে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ২৫ মিনিটের দিকে ট্রেনটি নরসিংদী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। ওই সময় ঝুমুর কান্তি বাউল নরসিংদী থেকে ট্রেনের পেছনে বগিতে উঠেন। ট্রেনে উঠে তিনি জানালার পাশে দাঁড়াতে চাইলে সিটে থাকা মনজুর নামে আরেক যাত্রী তাকে সেখানে দাঁড়াতে বাঁধা দেন। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে কথাকাটির এক পর্যায়ে সিটে বসা মনজুর ঝুমুর বাউলকে জানালার পাশ থেকে সরিয়ে দিতে তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। ঝুমুর বাউল উঠে দাঁড়িয়ে ধাক্কা মারলো কেন সে কথা জানতে চাইলে মনজুর ক্ষেপে গিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এতে ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন ঝুমুর বাউল।
পরে অন্য যাত্রীরা তাকে উদ্ধার করে ট্রেন থেকে নামিয়ে দিলে রেলওয়ে স্টেশনে উপস্থিত লোকজন তাকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে ট্রেনটি সকাল ৬টা ৩৪ মিনিটে নরসিংদী রেলস্টেশন ছেড়ে এলে অভিযুক্ত যাত্রীও সেই ট্রেনে চড়ে কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছান। এর আগেই ট্রেনের যাত্রীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে অভিযুক্ত ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করলে তা কমলাপুর রেলওয়ে পুলিশের নজরে আসে। পরে ট্রেনের ভেতর থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় তাকে গ্রেফতার করে রেলওয়ে পুলিশ।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ (হিরো) ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনার সময় ফাঁড়িতে ছিলাম। স্থানীয়রা আহত ঝুমুর বাউলকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল নেয়ার পথে তিনি মারা গেলে লাশ বীরপুরস্থ তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হবে।
জেএন/এমআর