জামালপুরে চুরি হওয়া ধর্মমন্ত্রীর আইফোন মালয়েশিয়ায় উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক

ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খানের মোবাইল চুরি হয় জামালপুরে। স্থানীয় একজনের জানাজায় অংশ নিতে গিয়ে মোবাইলটি হারান তিনি। এরপর সেটি জামালপুর থেকে কয়েক হাত ঘুরে চলে যায় চট্টগ্রামের চোরাই মোবাইলের হাব খ্যাত রিয়াজউদ্দিন মার্কেটে। সেখান থেকে সংঘবদ্ধ চক্রের হাত ধরে মন্ত্রীর চুরি যাওয়া আইফোনটি চলে যায় মালয়েশিয়ায়। সেখান থেকে ঘটনার এক মাস পর মোবাইলটি উদ্ধার করে এনেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

- Advertisement -

ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগ জানিয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চুরি যাওয়া দামি মোবাইলগুলোর একটা বড় অংশ বিদেশে চলে যায়। দেশ থেকে চোরাই মোবাইলের নিরাপদ গন্তব্য হয়ে উঠেছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, দুবাই, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছে, চুরি যাওয়া মোবাইল দেশে ব্যবহার করলে ধরা পড়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। সেজন্য চোর চক্রের সদস্যরা বিদেশে চোরাই মোবাইল পাচারের একটা নিরাপদ পথ তৈরি করেছে। তারা আমাদের দেশ থেকে চোরাই মোবাইল ওইসব দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আবার ওইসব দেশে চুরি হওয়া মোবাইলগুলো আমাদের দেশে আনছে।

- Advertisement -google news follower

মন্ত্রীর মোবাইল উদ্ধার করতে গিয়ে ডিবির টিম দেশের বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় চোর চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে। তারা হলো জাকির হোসেন, রাজিব খান মুন্না, মাসুম শরীফ, আল আমিন মিয়া, মো. রাসেল, আনোয়ার হোসেন অরফে সোহেল, বিল্লাল হোসেন ও জিয়াউল মোল্লা জিয়া। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৬৩টি চোরাই মোবাইল।

গতকাল বুধবার মন্ত্রীর মোবাইল উদ্ধার ও আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন ডিএমপির (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি জানান, গত ৩০ এপ্রিল জামালপুরের ইসলামপুর পৌরসভার মোশারফগঞ্জ এলাকায় একটি জানাজায় অংশ নিয়েছিলেন ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক। ভিড়ের মধ্যে তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে আইফোনটি চুরি হয়। চুরির বিষয়টি জানতে পেরে মোবাইলটি উদ্ধারে তৎপর হয় ডিবি। দীর্ঘ এক মাস বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৮ মে মোবাইলটির অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে তদন্ত কর্মকর্তারা। চক্রটির কয়েক হাত ঘুরে মন্ত্রী ফোনটি পাঠিয়ে দেয় মালয়েশিয়ায়। সেখান থেকেই এটি উদ্ধার করা হয়েছে।

- Advertisement -islamibank

হারুন অর রশীদ বলেন, অসংখ্য মানুষের সমাগম হয়—এমন জায়গা টার্গেট করে চোরেরা। তারা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে খুঁজতে থাকে কার সঙ্গে দামি মোবাইল আছে। এরপর সুযোগ বুঝে মোবাইল নিয়ে সটকে পড়ে। যে জেলা থেকে চুরি করে, সেই এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় চলে যায় তারা। সেখানে গিয়ে নতুন করে কোথায় চুরি করবে, তার সন্ধান করতে থাকে। আর চুরি করা মোবাইলগুলো চোরাই মোবাইল বাজারজাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের কাছে বিক্রি করে দেয়। তারা কিছু মোবাইল স্থানীয় দোকানদারদের মাধ্যমে বিক্রয় উপযোগী করে। কিছুর আইএমইআই পরিবর্তন করে। আর দামিগুলো কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেয় চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন মার্কেটে। যেখানে চোরাই মোবাইল বেচাকেনা হয়। ওই মার্কেট থেকে দামিগুলো বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। মন্ত্রীর মোবাইলটিও একই পথে মালয়েশিয়ায় পৌঁছায়।

মন্ত্রীর মোবাইল উদ্ধারসহ চোর চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার অভিযানের নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত উপকমিশনার আশরাফউল্লাহ। তিনি ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের ইনচার্জ।

আশরাফউল্লাহ বলেন, ওই জানাজায় উপস্থিতদের ছবি বিশ্লেষণ করে পাঞ্জাবি-টুপি পরা এক যুবককে প্রথমে শনাক্ত করা হয়। যাকে স্থানীয়রা কেউ চেনে না। খোঁজ নিয়ে জানা যায় ছবির ব্যক্তিটি মুন্না। তাকেসহ ৯ জনকে গত ২৮ মে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চোর চক্রের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক কামরুজ্জামান হীরু মন্ত্রীর মোবাইলটি মালয়েশিয়ায় পাঠিয়ে দেয়।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM