ঘূর্ণিঝড় রিমালে স্থগিত ১৯টি উপজেলায় চলছে ভোটগ্রহণ। রবিবার (৯ জুন) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ভোটগ্রহণ বিরতিহীনভাবে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এর আগে, গত ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলায় ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন শুরু হয়। এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬টি, ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ৮৭টি এবং ৫ জুন চতুর্থ ও শেষ ধাপে ৬০টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে স্থগিত হওয়া উপকূলীয় এলাকার ২০টি উপজেলায় রবিবার ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য শনিবার শেষ মুহূর্তে রাঙামাটির বাঘাইছড়ির নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। ফলে ১৯টি উপজেলায় চলছে ভোটগ্রহণ।
উপজেলাগুলো হলো বাগেরহাট জেলার শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, মোংলা; খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা, ডুমুরিয়া; বরিশালের গৌরনদী, আগৈলঝাড়া; পটুয়াখালী জেলার সদর, মির্জাগঞ্জ, দুমকি; পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া; ভোলার লালমোহন, তজুমদ্দিন; ঝালকাঠির রাজাপুর, কাঁঠালিয়া; বরগুনার বামনা, পাথরঘাটা ও নেত্রকোনার খালিয়াজুরী।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগের চারটি ধাপের ধারবাহিকতায় এবারের নির্বাচনেও বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসার ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, দফাদারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে। নির্বাচনে স্বাভাবিক এলাকার ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, দফাদারসহ মোট ১৭ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবেন ১৮-১৯ জন সদস্য। বিশেষ এলাকার (পার্বত্য ও দুর্গম এলাকা) সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০-২১ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
দেশের ৪৯৫ উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হচ্ছে এবার। প্রথম ধাপের ১৩৯ উপজেলায় গড়ে প্রায় ৩৬ শতাংশ ভোট পড়ে। প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৮ জন নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা নির্বাচিত হন ২২ জন। এ ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৮ শতাংশ। ২৯ মে তৃতীয় ধাপের ৮৭টি উপজেলার নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৬ দশমিক ২৪ শতাংশ। চতুর্থ তথা শেষ ধাপেও বাড়েনি ভোটের হার। এ ধাপে ৬০টি উপজেলায় পড়ে ৩৪ দশমিক ৩৩ শতাংশ ভোট।
প্রথম ধাপের রেকর্ডসংখ্যক কম ভোটের পর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে নির্বাচন কমিশন। এর পেছনে কৃষকদের ধান কাটা ও বৃষ্টিসহ পাঁচটি কারণকে দায়ী করে পরে ধাপে ধাপে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে আশাবাদী ছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু পরের ধাপেও কাঙ্ক্ষিত ভোটার উপস্থিতি না হওয়ায় সরকারবিরোধী বিএনপির নির্বাচন বর্জনকেই মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত চতুর্থ উপজেলা পরিষদের ভোটে ৬০ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং ২০০৯ সালের তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ৬৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে। এই হিসেবে গত দেড় দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম।
জেএন/এমআর