মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে আবারও মর্টার শেল ও ভারী গোলার বিকট শব্দ শুনতে পাচ্ছেন কক্সবাজারে টেকনাফ সীমান্তের মানুষ। বুধবার বিকেল থেকে গোলার শব্দ মিয়ানমার সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এতে লোকজনের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক।
সীমান্তের কাোকাছি টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘সন্ধ্যা থেকে রাখাইন রাজ্যের ভারী গোলার বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে। এতে নারী-শিশুদের নিয়ে ভয়ে রয়েছে সীমান্তের মানুষ। এভাবে আর কত দিন মানুষ আতঙ্কে দিন পার করবে। দিন দিন ওপারের গোলার আওয়াজ বাড়ছে। আমরা শুনেছি, ওপার থেকে কিছু মানুষ অনুপ্রবেশের অপেক্ষা করছে।’
আবারও সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে উল্লেখ করে টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিণ জালিয়াপাড়ার কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সীমান্তে বসবাসকারীদের মাধ্যমে ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা শুনেছি। সীমান্তে ভারী গোলার বিকট শব্দ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ ধরনের গোলার বিকট আওয়াজ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বাড়াচ্ছে।’
এদিকে মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশের দিকে গুলি চালানোর ঘটনায় মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে সেন্টমার্টিনের ১২ দিন ধরে নাফ নদী-রুটে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার বাসিন্দা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।
দ্বীপের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, বিকেল থেকে মিয়ানমারের ওপার থেকে দ্বীপে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া সে দেশের সীমান্তে যুদ্ধ জাহাজও রয়েছে। ঈদের আগে কক্সবাজার থেকে জাহাজে করে যেসব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এনেছিল সেগুলো শেষ হওয়ার পথে। এছাড়া জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুণ বেড়েছে। মূলত আগের মতো টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল শুরু হলে সব সমস্যা শেষ হতো।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সারাদিন বৃষ্টিতে দ্বীপের কিছু অংশ ডুবে ছিল। কিন্তু বৃষ্টি থামার সঙ্গে সঙ্গে পানিও নেমে গেছে। আজকেও ওপার থেকে গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। মূলত দ্বীপের একমাত্র সমস্যা হচ্ছে নৌযান চলাচল। এটি চালু হলে দ্বীপের মানুষের কোনো সমস্যা আর থাকতো না। এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ফের সংকটের পথে। যার কারণে দ্বীপের মানুষ দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আদনান চৌধুরী বলেন, এখনও মিয়ানমার সীমান্তে গুলি বর্ষণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে লোকজন যাতে ভয়ভীতির মধ্যে না থাকে সেজন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুট চলাচলের বিকল্প পথ শিগগিরই চালু করার কথা ভাবা হচ্ছে।
জেএন/এমআর