আইনের সংস্পর্শে আসা বা আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িতকে শিশু হিসেবে নির্ধারণ করার এখতিয়ার কোনো তদন্ত কর্মকর্তার নেই বলে পর্যবেক্ষণসহ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন,কাউকে শিশু হিসেবে মনে হলে তদন্ত কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠান তার বয়স নির্ধারণে শিশু আদালতে হাজির করবে এবং সেক্ষেত্রে শিশু আদালত ২০১৩ সালের শিশু আইনের ২১ ধারার বিধান অনুসরণ করে বয়স নির্ধারণ করবে।
বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া এ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায় বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, শিশু আইনের ২১ ধারার বিধান অনুযায়ী, কেউ অভিযুক্ত হোক বা না-হোক, কেবল কাউকে শিশু হিসেবে অভিহিত করার অধিকার শিশু আদালতকে দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত কোনো শিশুর বয়স নির্ধারণে কোনো শিশুর শিক্ষাগত সনদে উল্লেখিত জন্মতারিখ এবং জন্মমৃত্যু নিবন্ধন আইনের বিধান মতে নিবন্ধিত জন্মসনদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে জন্মসনদ প্রাধান্য পাবে। আর জন্মনিবন্ধনের জন্মতারিখ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদের জন্মতারিখ ও আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুর বাহ্যিক অবয়ব-শারীরিক গঠন আপাতদৃষ্টে সাংঘর্ষিক বলে মনে হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি রেজিস্ট্রার ও ছাত্রছাত্রীর হাজিরা খাতা তলব করে মিলিয়ে দেখতে হবে। তা সম্ভব না হলে সরকারি মেডিকেল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে গঠিত বোর্ডের মাধ্যমে বয়স নির্ধারণ করতে হবে।
রায়ে আরও বলা হয়েছে যে, আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত কোনো শিশু বা ব্যক্তিকে যদি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার বিধানমতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধের জন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করা হয়; আর সেক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বয়স নির্ধারণের কোনো অকাট্য বিশ্বাসযোগ্য দলিল উপস্থাপন না করা হয়, তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার বিধানমতে জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করার আগে আইনের সঙ্গে সংঘাতে জড়িত শিশুর বয়স নির্ধারণে শিশু আইনের বিধান অনুযায়ী উপরিউক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
একই ভাবে শিশু আদালত কিংবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আইনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িত কোনো শিশুর বয়স নির্ধারণে উপরিউক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করবেন।
জেএন/এমআর