এমপি আনার হত্যাকাণ্ড

দুই দেশে ২০ কোটি টাকার লেনদেন!

মিন্টুর দেওয়ার কথা ছিল ২ কোটি টাকা তাকে ছাড়াতে দুই এমপির তদবির

অনলাইন ডেস্ক

এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডে ভারত ও বাংলাদেশে অন্তত ২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। খুনিদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় বিষয়টি সামনে এসেছে। ঝিনাইদহের আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুল করিম মিন্টুর দেওয়ার কথা ছিল ২ কোটি টাকা। কিন্তু তিনি খুনিদের সেই টাকা দেননি। দক্ষিণাঞ্চলের একজন নবনির্বাচিত এমপির দেওয়ার কথা ছিল ওই টাকা। কিন্তু তিনি টাকা না দেওয়ায় মিন্টু খুনিদের টাকা দিতে পারেননি। দুর্ধর্ষ খুনি শিমুল ভূঁইয়া গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেছেন।

- Advertisement -

এদিকে মিন্টুকে গ্রেফতারের পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে দুইজন প্রভাবশালী এমপি ব্যাপক তদবির করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন এবারই প্রথম এমপি হয়েছেন। যার সঙ্গে মিন্টুর পারিবারিক সখ্য রয়েছে। আবার অবৈধ কিছু ব্যবসার অংশীদারও তারা। ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, চাপের মুখেও তারা পিছু হটেনি। ডিবি সূত্র বলছে, প্রয়োজনে ওই এমপিদের ডিবিতে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের কোন সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে আইনের আওতায় আনা হবে।

- Advertisement -google news follower

ডিবি প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুনুর রশীদ বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আমরা কোন ছাড় দেব না। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। নতুন করে যদি কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এখন পর্যন্ত তদন্ত সঠিক পথেই চলছে।’

তদন্তকারী একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে বড় ধরনের চোরাচালান জড়িত। বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী চোরাকারবারী এই ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। শুধু বাংলাদেশের চোরাকারবারীরাই নয়, ভারতের চোরাকারবারীরাও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। বিশেষ করে স্বর্ণ চোরাকারবারীরা এই ঘটনার সম্পৃক্ত। দুই পক্ষই এই হত্যাকাণ্ডের জন্য টাকা খরচ করেছে। কোন পক্ষ কত টাকা খরচ করেছে সেই তথ্য খুনিদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে।’

- Advertisement -islamibank

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আখতারুজ্জামান শাহীনের কালীগঞ্জের বাংলোতে এই হত্যাকাণ্ডের প্রথম পরিকল্পনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন চোরাকারবারী উপস্থিত ছিলো। ওই বৈঠকে থাকা মিন্টু তখন তার প্রতিনিধি হিসেবে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল ওরফে গ্যাস বাবুকে পরিচয় করিয়ে দেন। বাবু গ্রেপ্তারের পর ডিবির কাছে এসব কথা স্বীকার করেছে। মিন্টু ডিবি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, দক্ষিণাঞ্চলের একজন নবনির্বাচিত এমপি তাকে এই টাকা দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি টাকা না দেওয়ার কারণে তিনি টাকাটা খুনিদের দিতে পারেননি। ফলে ওই এমপির কতটুকু সংশ্লিষ্টতা এই ঘটনার সঙ্গে সেটাও খতিয়ে দেখছে ডিবি।

হত্যাকাণ্ডের পর শিমুল ফোনে বাবুকে জানায়, কিলিং মিশন শেষ হয়েছে। টাকা দেওয়ার জন্য বাবুকে চাপ দেন শিমুল। এই কথা বাবু মিন্টুকে জানায়। কিন্তু হত্যাকাণ্ড যে হয়েছে সেটা নিশ্চিত করার কথা জানায় বাবু। তখন শিমুল দুইজনের ফোনে এমপি আনারের লাশের ছবি পাঠিয়ে দেয়। পরে তারা সেই ফোন ফেলে দেয়। তখন তারা শিমুলকে ২০ লাখ টাকা দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত মিন্টু ওই এমপির কাছ থেকে টাকা না পাওয়ায় পুরো টাকা দিতে পারেনি। পুলিশ গ্রেপ্তারের পর তাদের সেই মোবাইলফোন থেকে সেই ছবি উদ্ধার করেছে।

এদিকে খুব দ্রুতই আনারের মেয়ে ডরিনকে ভারতে ডেকে নেওয়া হতে পারে। উদ্ধার হওয়া মাংসের টুকরো ও হাড়ের সঙ্গে ডিএনএ মেলাতে তাকে ভারতে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। ডরিন ইতিমধ্যে ভারতের ভিসা পেয়েছেন। খুব শিগগিরই ডরিন ভারতে যাবে বলে ডিবির একটি সূত্র জানিয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিকভাবে ফরেনসিকের জিনিস সংরক্ষণ করা গেলে দীর্ঘদিন পরও লাশ সনাক্ত করা সম্ভব।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM