দেশবরেণ্য সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের ৮৩তম জন্মদিন আজ। ১৯৪১ সালের ২৮ জুন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে জন্ম নেন এই তারকা।
বাংলা সংগীতাঙ্গনের সবার প্রিয় এই মানুষটি দীর্ঘদিন ধরেই মিডিয়ার বাইরে। কেননা, তিন শারীরিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়েছেন। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন সমস্যার কারণে নিয়মিত ডাক্তার দেখাচ্ছেন। তাই বাসাতেই এখন সময় কাটে তার। কথাও বলতে পারেন না তেমন।
ফেরদৌসী রহমান গণামাধ্যমকে বলেছেন, `দেখতে দেখতে জীবনের এতটা বছর পেরিয়ে আজ ৮৪-তে পা রাখছি’।
এদিকে তার ভক্তরা তাকে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তার দীর্ঘায়ু কামান করেন।
ফেরদৌসী রহমান একাধারে একজন গায়িকা, গবেষক ও সঙ্গীত পরিচালক। প্রায় পাঁচ দশক ধরে তার সঙ্গীত জগতে তার পদচারণা। পল্লীগীতি, রবীন্দ্রসঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, আধুনিকসহ সব ধরনের গানই তিনি করেছেন।
সঙ্গীত জগতে তার অসামান্য অবদানের জন্য ফেরদৌসীর রহমান স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক এবং জাতীয় চলচ্চিত্র পেয়েছেন।
ফেরদৌসী রহমান ২৮ জুন ১৯৪১ সালে ভারতের কোচবিহারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন পল্লীগীতি গায়ক আব্বাস উদ্দিন। ছোটবেলায় গানে হাতে খড়ি হয় তার পিতার কাছে। পরবর্তীতে ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ইউসুফ খান কোরেইশী, কাদের জামেরী, গুল মোহাম্মদ খান প্রমূখ সঙ্গীতজ্ঞের কাছে তালিম নিয়েছেন।
খুব অল্প বয়স থেকে তিনি মঞ্চে পারফরম্যান্স শুরু করেন। মাত্র ৮ বছর বয়সে রেডিওতে খেলাঘর নামের অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
১৯৬০ সালে ‘আসিয়া’ নামের চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম নেপথ্য কণ্ঠদান (প্লেব্যাক) করেন। ৬০ ও ৭০-এর দশকের বহু চলচ্চিত্রে তিনি নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তার প্লে ব্যাক করা চলচ্চিত্রের সংখ্যা ২৫০-এর কাছাকাছি। ১৯৪৮ সালে তিনি প্রথম রেডিওতে গান করেন। তখন তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইতেন। ১৯৫৬ সালে তিনি প্রথম বড়দের অনুষ্ঠানে গান করেন। ১৯৬৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি প্রথম গান রেকর্ড করেন এইচ এম ভি থেকে।
১৯৬০ সালে ফেরদৌসী রহমান ইউনেস্কো ফেলোশিপ পেয়ে লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিক থেকে ৬ মাসের সঙ্গীতের ওপর স্টাফ নোটেশন কোর্স সম্পন্ন করেন। তিনটি লং প্লেসহ প্রায় ৫০০টি ডিস্ক রেকর্ড এবং দেড় ডজনের বেশি গানের ক্যাসেট বের হয়েছে তার। তার মাত্র ১টি সিডি বের হয়েছে ‘এসো আমার দরদী’। এ পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার গানের রেকর্ড হয়েছে তার।
তিনি বাংলাদেশের প্রথম মহিলা সংগীত পরিচালক। ১৯৬০ সালে রবীন ঘোষের সঙ্গে ‘রাজধানীর বুকে’ নামক চলচ্চিত্রে সংগীত পরিচালনা করেন। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে এসো গান শিখি অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন।
জেএন/এমআর