অনলাইনে জঙ্গিদের তৎপরতা বন্ধ করাকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। এজন্য জঙ্গিদের তৎপরতা রুখে দিতে অভিভাবক থেকে শুরু করে সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। এছাড়া সকল অভিভাবককে তাদের সন্তানদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখারও পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার।
সোমবার (১ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার ঘটনায় নিহতদের স্মরণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জঙ্গিরা অনলাইনে এখনো তাদের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের তৎপরতা পুলিশ কীভাবে রুখে দিচ্ছে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, অনলাইনে একটি তথ্য অল্প সময়ে অল্প খরচে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় এবং বেশি মানুষকে সংক্রমিত করার সুযোগ রয়েছে। এসব বন্ধে সরকার ও পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া তৎপরতার পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণির মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। মিডিয়ার লোকদের এগিয়ে আসতে হবে এবং সচেতন শ্রেণির যারা আছেন তাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার বলেন, সন্তানরা কোথায় যাচ্ছে, কী করছে, কীভাবে চলছে, কাদের সাথে থাকছে, কী নিয়ে থাকছে, অনলাইনে কতক্ষণ থাকছে প্রত্যেক বাবা-মা ও অভিভাবকরা যদি এসব বিষয়ে ঠিকমতো লক্ষ্য রাখেন তাহলে আমি মনে করি এই সংক্রমণ থেকে আমরা অনেকটা নিরাপদ থাকতে পারব।
জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা ইন্সুরেন্স কোম্পানিগুলোতে ঘাপটি মেরে থাকছে সম্প্রতি এমন তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ কেমন ভূমিকা পালন করছে জানতে চাইলে হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের জঙ্গি সংশ্লিষ্ট যেকোনো ধরনের প্রতিষ্ঠানই হোক, ব্যক্তি হোক বা সংগঠনই হোক তাদের প্রত্যেকের পেছনে আমাদের তৎপরতা রয়েছে এবং এই তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বাংলাদেশও তার থেকে মুক্ত নয়। তবে আমি বলব, বাংলাদেশের পুলিশ বা এন্টি টেরোরিজম ইউনিট ও অন্যান্য সহযোগী যে সংগঠনগুলো রয়েছে জঙ্গি দমনের জন্য তাদের যে দক্ষতা, দূরদর্শিতা এটি বাংলাদেশকে সুন্দর অবস্থানে রয়েছে এবং বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এজন্য বিভিন্ন জায়গায় আমরা দেখে থাকি যে জঙ্গি হামলা হওয়ার পর অভিযান চালানো হয় কিন্তু বাংলাদেশেই একমাত্র উদাহরণ যে বিভিন্ন রকম অপারেশন আমরা করতে সক্ষম হয়েছি যে, জঙ্গি হামলা হওয়ার আগে আমাদের কাছে তথ্য ছিল। গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে আমরা নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, অনলাইনে জঙ্গি মতাদর্শ যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য সিটিটিসি, ডিবি ও সিআইডিসহ অন্যান্য গোয়েন্দা বাহিনীর তৎপরতাগুলো অব্যাহত আছে। আমরা মনে করি, যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার শক্তি বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে এবং আমাদের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট বা সিটিটিসিসহ অন্যান্য যে সংগঠনগুলো তাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে।
জেএন/এমআর