মূলহোতা মাহবুব গ্রেফতার

ইউরোপে পাঠানোর নামে লিবিয়ায় নিয়ে নির্যাতন, দেশে টাকা আদায়

অনলাইন ডেস্ক

ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়ায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন করে দেশে স্বজনদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের প্রধান মোহাম্মদ মাহাবুব পাঠানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৮ জুন রাতে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

- Advertisement -

সিআইডি জানায়, গ্রেফতার মাহাবুব পাঠান দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে লিবিয়ায় অবস্থান করে লিবিয়ার বেনগাজীর বাংলাদেশি কমিউনিটিকে নেতৃত্ব প্রদানের আড়ালে মানবপাচার চক্র পরিচালনা করে আসছিলেন।

- Advertisement -google news follower

সোমবার (১ জুলাই) সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, একটু ভালো জীবনযাপনের আশায়, পরিবারের সদস্যদের সুখে রাখতে ও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় বাংলাদেশ থেকে জীবিকার সন্ধানে পৃথিবীর উন্নত দেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বহু মানুষ। এসব মানুষের অনেকেই মানবপাচারকারী দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে হয়েছে সর্বস্বান্ত ও নিঃস্ব। মানবপাচারকারী চক্রটি বাংলাদেশিদের উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে লিবিয়া নিয়ে গিয়ে আটক করতো। এরপর তাদের আটক রেখে শারীরিক নির্যাতন করে নির্যাতনের ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ আদায় করতো। মুক্তিপণ আদায়ের পর বিপজ্জনক নৌযাত্রার মাধ্যমে ইউরোপে পাঠানোর চেষ্টা করতো।

- Advertisement -islamibank

২০২১ সালের ১৭ মে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে গ্রেফতার মাহাবুব পাঠানের চক্রের শিকার ৬৪ বাংলাদেশিসহ মোট ১০৪ জন অভিবাসী ভাসতে থাকা অবস্থায় উদ্ধার হন। পরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় তিউনিসিয়ায় থাকা এসব বাংলাদেশিকে ফেরত আনা হয়। তাদের মধ্যে একজন ভুক্তভোগী মিলন বেপারী (২৩)।

সিআইডিপ্রধান বলেন, চক্রটি মিলন বেপারী ও অন্যান্য ভুক্তভোগীকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সে করে প্রথমে দুবাই নিয়ে যায়। এরপর দুবাই থেকে বিমানযোগে মিশর হয়ে লিবিয়ার বেনগাজীতে নেওয়া হয়। লিবিয়ার বেনগাজীতে মূলহোতা মাহাবুব পাঠান ও তার সহযোগিরা মাহাবুব পাঠানের ক্যাম্পে তাদের আটক রাখে এবং নির্যাতন করে। পরে সেই নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

ভুক্তভোগী মিলন বেপারী ২০২১ সালের ২ মে আসামিদের দেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দুই লাখ ৯৯ হাজার ৮২০ টাকা প্রদান করেন এবং বাংলাদেশে অবস্থানরত চক্রের সদস্য হেনা বেগমকে ৪ লাখ টাকা দেন। এরপর আসামি মাহাবুব পাঠান ও তার সহযোগীরা সুকৌশলে মিলন বেপারীসহ ভুক্তভোগীদের ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে দ্বিতীয় পর্যায়ে লিবিয়ার ত্রিপলীতে চক্রের সক্রিয় সদস্য মনিরের ক্যাম্পে প্রেরণ করে। সেখানে দ্বিতীয় দফায় শারীরিক নির্যাতন করে টাকা দাবি করা হয়। এরপর ২০২১ সালের ১২ মে মিলন বেপারীর মা ও চাচি আবারও হেনা বেগমের কাছে ৪ লাখ টাকা দেন।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া আরও বলেন, এভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে ভুক্তভোগী মিলন বেপারীর পরিবার মোট ১০ লাখ টাকা প্রদান করেন। ১৫ দিন সেখানে আটকে নির্যাতন করে টাকা আদায়ের পর ভুক্তভোগী মিলনকে ইতালি পাঠানোর উদ্দেশ্যে ভূমধ্যসাগরে একটি প্লাস্টিকের নৌকায় আরও কয়েকজনের সঙ্গে তুলে দেওয়া হয়।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM