মিরসরাইয়ের সহাস্রাধিক পরিবার পানিবন্দি,দুর্ভোগ চরমে

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার সহাস্রাধিক পরিবার গত ৪দিন ধরেই পানিবন্দি জীবনযাপন করছেন। সাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাড়ি-ঘর তলিয়ে যায়।

- Advertisement -

ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় রান্না-বান্না বন্ধ রয়েছে অসংখ্য পরিবারে। দীর্ঘ লম্বা ছুটি কাটিয়ে আজ প্রাথমিক বিদ্যালয় খুললেও শিশুরা স্কুলে যেতে পারছে না। খাবার সংকট দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর। পুকুরের মাছ বের হয়ে গেছে অনেকের।

- Advertisement -google news follower

স্থবির হয়ে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। পাহাড়ি ঢলের স্রোতে ভেঙেছে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রামীণ সড়ক এবং পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে রোপা আমন ও সবজি খেত।

জানা গেছে, টানা ছয় দিনের বৃষ্টিতে উপজেলার করেরহাট, হিঙ্গুলী, বারইয়ারহাট পৌরসভা, মিরসরাই পৌরসভার নিম্নাঞ্চল, জোরারগঞ্জ, কাটাছরা, দুর্গাপুর, মিঠানালা, মিরসরাই সদর, খৈয়াছড়া, ওসমানপুর ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।

- Advertisement -islamibank

বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও বারইয়ারহাট-রামগড় সড়কের বিভিন্ন স্থানে। সড়কে গর্তের কারণে অনেকটা চলাচলের অনুপযোগী জনবহুল বড়দারোগাহাট-বগাচতর সড়ক, জোরারগঞ্জ-মুহুরীপ্রজেক্ট সড়ক।

পানিবন্দি হয়ে আছে ফেনাপুনি, ওসমানপুরের মরগাং, চিনকীআস্তানা ও খিলমুরালী গ্রামের সহস্রাধিক পরিবার। চুলায় পানি ওঠায় রান্নাও বন্ধ।

খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ফেনাফুনী গ্রামের সত্তোরোর্ধ রহিমা বেগম, বৃদ্ধ আবুল কালাম, ও যুবক আজিজুল ইসলাম জানান, গত প্রায় দুই যুগ ধরে বর্ষা মৌসুমে তারা পানির সাথে ভাসছেন। টানা কদিন বৃষ্টি পড়লেই পাহাড়ি ঢল নেমে তাঁদের ঘরবাড়ি ডুবিয়ে দেয়।

রান্না-বান্না বন্ধ থাকে বহুদিন। হাঁস-মুরগী, গবাদি পশু নিয়ে পড়তে হয় তাদের চরম বিপাকে। পানিতে ভেসে আসা বড় বড় সাপও ঢুকে পড়ে তাদের ঘরে।

ছোট ছোট শিশুদের পানিতে ভেসে যাওয়ার শঙ্কাও থাকে। দীর্ঘদিন ধরে খাল সংস্কার না থাকায় ও অপরিকল্পিতভাবে স্থাপনা নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দেয় বলে অভিযোগ করেন তারা।

বুধবার (৩ জুলাই) পানিবন্দি ৪৫০ পরিবারের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে বরে জানা যায়।

খৈয়াছড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহফুজুল হক জুনু বলেন, তার ইউনিয়নের ফেনাফুনী ও সৈদালী গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (১ জুলাই) বিকালের দিকে তিনি এলাকগুলো পরিদর্শন করেছেন।

তিনি আরো বলেন, মূলত মায়ানী ও মঘাদিয়া ইউনিয়নের লোকজন খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কারণে তার ইউনিয়নের লোকজন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

তিনি এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানান তিনি।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে রোপা আমন ও সবজির কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মিরসরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আল মাহমুদ জানান, মুহুরী প্রজেক্ট এলাকায় মৎস্য প্রকল্পগুলোর পাড় নিচু হওয়ায় দুই দিন বৃষ্টি হলেই পানি বাইরে চলে যায়।

টানা ৬ দিন বৃষ্টি হওয়ায় মৎস্যচাষিদের কিছুটা ক্ষতি হতে পারে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চাষি তাকে ক্ষতির বিষয়ে অবহিত করেনি বলে জানান তিনি।মিরসরাই, সহাস্রাধিক, পানিবন্দি,দুর্ভোগ

জানতে চাইলে ইউএনও মাহফুজা জেরিন বলেন, গত ৬ দিন টানা বৃষ্টিতে মিরসরাইয়ের অনেক এলাকায় পানি উঠে গেছে। বুধবার উপজেলার খৈয়াছড়া ইউনিয়নে ২৫০ পরিবার ও ইছাখালী ইউনিয়নের ২০০ পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানোর জন্য জনপ্রতিনিধিদের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM