দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমাণ কাঁচা মরিচ আসছে প্রতিদিনই। ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি বাড়লেও দুই দিনের ব্যবধানে হিলিতে দেশীয় কাঁচা মরিচ ডাবলসেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন।
আমদানিকারকরা বলছেন,বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমান কাঁচা মরিচ আমদানি হওয়ার পরেও কেন দাম বাড়ছে তা আমাদের জানা নেই।
এদিকে খুচরা বিক্রেতারা বলছেন,কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ তুলতে পারছে না কৃষকেরা। একারণে মোকামগুলোতে সরবরাহ কমে যাওয়া দেশীয় কাঁচা মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পণ্যটির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতা সাধারণ।
হিলি বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত মঙ্গল-বুধবার দুদিন মানভেদে দেশীয় কাঁচা মরিচ ১৩০-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সেই কাঁচা মরিচ কেজিতে ৪০-৭০ টাকা বেড়ে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আর বন্দরে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ মানভেদে ১৪৫-১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রচুর আমদানির খবরে হিলি বাজারে কাঁচা মরিচ ক্রয় করতে এসে উল্টো বিপাকে পড়েছেন কয়েকজন ক্রেতা। তারা বলেন, কোরবানী ঈদের পর দেশীয় কাঁচা মরিচ ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি দরে কিনেছি।
এদিকে খবর শুনেছি ভারত থেকে প্রচুর কাঁচামরিচ আসছে। তাই কম দামে পাবো আশায় হিলি বাজারে এসে দেখি উল্টো ঝাঁজ বেড়ে গেছে মরিচের। কাঁচা মরিচ এখন ২শ টাকা কেজিতে উঠেছে। দাম বেশি হওয়ায় অল্প কাঁচা মরিচ নিয়ে ফিরতে হচ্ছে।
হিলি বাজারের কাঁচা মরিচ বিক্রেতা শেখ বিপ্লব জানান, টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে ক্ষেত থেকে কাঁচা মরিচ তুলতে পারছেনা কৃষকেরা। ফলে সরববাহ কমে যাওয়ায় মোকামগুলোতে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিগত দিনে তীব্র গরম আর টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কাঁচা মরিচের ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। তাতে উৎপাদনও অনেক কম হচ্ছে। ফলে বাজারে সরবরাহ কমেছে। এ কারণে মোকামগুলোতে পাইকাররা বেশি দামে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছে।
আমরা খুচরা ব্যবসায়ীররা পাইকারের কাছ থেকে বেশি দামে কিনে এনেছি। পরিবহন খরচ বাদ দিলে ৪/৫ টাকা লাভ থাকে। এসব কাঁচা মরিচ আমরা বিরামপুর,পাঁচবিবি থেকে কিনে থাকি। তবে এভাবে বৃষ্টি বাড়ে তাহলে কাঁচা মরিচের দাম আরও বৃদ্ধি পাবে।
তবে ভারত থেকে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ হিলি বাজারে পাওয়া যায়না। আমদানিকারকরা নিজ চালানে দেশের বিভিন্নস্থানে পাঠাচ্ছেন।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহীনুর রেজা শাহিন বলেন, প্রতিদিন বন্দর দিয়ে প্রচুর পরিমান কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে। টানা কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে মোকামগুলোতে দেশীয় কাঁচা মরিচের সরবরাহ কমেছে। তাই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
তবে আমদানিকৃত কাঁচা মরিচ বন্দরে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজিতে শুল্ক দিতে হচ্ছে ৩৫ টাকা আর প্রতি মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি হচ্ছে ৫০০ মার্কিন ডলারে।
পানামা হিলি পোর্টের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন মল্লিক প্রতাব জানান, অনুমতি পাওয়ার পর মে মাসের ২৩ তারিখ থেকে বন্দর দিয়ে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হয়।
কাঁচা মরিচ একটি পচন শীল পণ্য তাই কাস্টমসের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষে দ্রুত ছাড়করণ করা হচ্ছে। এতে বন্দর থেকে সরকারের রাজস্ব আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি বন্দর কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের দৈনন্দিন আয়ও বেড়েছে।
হিলি কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে,২৩ মে থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত ভারতীয় ১৬৭ টি ট্রাকে ১ হাজার ৬২৫ মেট্রিক টন ২৬ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি হয়েছে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে।
জেএন/পিআর