চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর দক্ষতা বাড়াতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা ও বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নানাবিধ প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তির ব্যবহারে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সরকারী-বেসরকারী চাকুরিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহণের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিকল্পিত জনসংখ্যা আগামী ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম হাতিয়ার। এজন্য জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে পরিণত করতে হবে। পাশাপাশি সুস্থ ও সবল জাতি গঠনে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। ছেলে হোক আর মেয়ে হোক, দু’টি সন্তানের বেশী নয়, একটি হলে ভালো হয়। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে সাম্যের ভিত্তিতে পরিবার পরিকল্পনা সেবা আরও বেগবান করতে হবে।
আজ ১১ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটরিয়ামে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-‘অর্ন্তভূক্তিমূলক উপাত্ত ব্যবহার করি, সাম্যের ভিত্তিতে সহনশীল ভবিষ্যৎ গড়ি’।
আলোচনা সভার পূর্বে বেলুন-কপোত উড়িয়ে ও র্যালির মাধ্যমে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা সেবা, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী ও অন্যান্য সেবার বিশেষ অবদানের জন্য বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে ১০ ক্যাটাগরিতে সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের মোট ২০ জন কর্মী ও প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা স্মারক-ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মমতা, ব্র্যাক, এফপিএবি, মেরীস্টোপস, বিএভিএস, ইমেজ, নিস্কৃতি, মাতৃ স্বাস্থ্য সংস্থা, বনফুল, আর.এইচ স্টেপ, ছায়াপথ ও ঘাসফুল’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। গর্ভবতী মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার পরিকল্পনায় সচেতনতা বাড়াতে নিরলসভাবে কাজ করার কারণে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। দেশের প্রত্যেকটি মানুষের হাতকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন কাজ চালিয়ে যেতে হবে। তাহলে আজকের বাংলাদেশ হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত আগামীর উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ।
আলোচনা সভায় অন্যান্য অতিথিবৃন্দ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্ন উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রত্যেক কাজে নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরী। নারীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে আন্তরিক হতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা সেবা আরও বেগবান করতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নসহ লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধি করতে হবে। দেশে এখন একটি আধুনিক ও স্মার্ট জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সকলের পারফরমেন্স বাড়াতে হবে। নিরাপদ প্রসবসেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা সমূহ আরও গতিশীল করতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে জনবল ও যন্ত্রপাতি সংকট সত্তেও সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে সাধারণ সেবা গ্রহীতাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারীর হার বৃদ্ধি করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে নিরাপদ সেবা দেয়ার জন্য কিভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারি সে ব্যাপারে পলিসি নিতে হবে। মানসম্মত পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করা গেলে সফলতা অবশ্যই আসবে। এজন্য দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয়কে কাজে লাগোতে হবে।
পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক গোলাম মো: আজমের সভাপতিত্বে ডবলমুরিং থানা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লিক্সন চৌধুরী ও কর্ণফুলী উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. সোমা চৌধুরীর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম। আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি শাহজাদা মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. ইফতেখার আহমদ, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আবদুল মালেক, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ.এন.এম ওয়াসিম ফিরোজ।
মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলায় পরিবার পরিকল্পনার সার্বিক কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান। বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (সিসি) ডা. ছেহেলী নার্গিস, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মমতা’র সিনিয়র পরিচালক স্বপ্না তালুকদার ও বিএভিএস’র মেডিকেল অফিসার ডা. এস.এম এমদাদ উল্লাহ।
জেএন/এমআর