কিডনি চুরির অভিযোগে আন্তর্জাতিক চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম আই ইনফার্মারি অ্যান্ড ট্রেনিং কমপ্লেক্সের (সিইআইটিসি) প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. রবিউল হোসেন, স্ত্রী খালেদা বেগম ও তার ছেলে ডা. রাজীব হোসেনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (১৪ জুলাই) মো. আবু বক্কর নামে এক ব্যক্তি চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত জাহান জিনিয়ার আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, ভুক্তভোগী আবু বক্কর সরল বিশ্বাসে অভিযুক্ত ডা. রবিউল হোসেনকে সহযোগিতার জন্য সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন।
সেখানে কৌশলে তার ডান কিডনি চুরি করা হয় বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ২০১২ সালে ডা. রাজীব হোসেনের অনুরোধে তার বাবা ডা. রবিউল হোসেনের চিকিৎসার জন্য রোগীর অ্যাটেনডেন্টস হিসেবে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে যান অভিযোগকারী।
ওই বছরের ১০ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত তিনি অভিযুক্ত তিনজনের সঙ্গে সিঙ্গাপুরে অবস্থান করেন। এসময় ডা. রাজীব হোসেন জানান, তার বাবার অবস্থা ভালো নয়, তাকে সুস্থ করতে কিছু টিস্যু দিতে হবে।
টিস্যু নিতে গেলে ছোট একটি অপারেশন করাতে হবে। ভুক্তভোগী সরল বিশ্বাসে অপারেশনের জন্য রাজি হন।
গত ৩ এপ্রিল মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালেই অপারেশন সম্পন্ন হয়। ডা. রবিউল হোসেনের জীবন বাঁচানোর জন্য কৃতজ্ঞতা স্বরূপ বাদীকে চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে ভুক্তভোগী আবু বক্করকে শারীরিকভাবে অক্ষম দেখিয়ে সেই চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২১ মে চট্টগ্রামের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শারীরিক পরীক্ষা করতে গেলে জানতে পারেন, সার্জারির মাধ্যমে বাদীর ডান কিডনি নেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগী মো. আবু বক্কর বলেন, আমার শারীরিক কোন সমস্যায় ছিলো না। আসলে আমি তো বুঝি না টিস্যু কি রকম হয়। তারা আমাকে বললো তাই আমি রক্তের যেকোন কিছু মনে করে সেটি দিতে রাজি হলাম।
তারা যে কিডনি নিয়ে ফেলবে সেটি আমি বুঝতে পারি নি। পরবর্তীতে যখন শারীরিকভাবে অক্ষম দেখিয়ে আমাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয় তখন আমি চিকিৎসকের কাছে যায়।
উনি আমাকে কিছু টেস্ট করতে বলে। সেই টেস্টগুলো করার পর চিকিৎসক আমাকে জানায় আমার একটা কিডনি নেই।
চিকিৎসকের কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিক আমি ডা. রবিউল হোসেন ও ডা. রাজীব হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হয়নি।
পরে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু গত ১৩ জুন কথা বলতে তাদের স্টাফ কোয়ার্টারে গেলে আমাকে গালিগালাজ করে এবং হুমকি দেয়।
মো. আবু বক্করের সর্বশেষ ১৩ জুন অভিযুক্তরা চট্টগ্রাম চক্ষু হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে অবস্থান করছিলেন।
জেএন/হিমেল/পিআর