বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অন্যতম মূল-হোতা কুমিল্লার সোহেল। সোহেলের বোন হালিমা বেগম কর্মরত রয়েছেন কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে।
জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি সোহেলের বোন হালিমা বেগম উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার হয়েছেন। জীবনে তিনটি চাকরির পরীক্ষার আবেদন করে দুটিতে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এর মধ্যে একবার বিসিএস পরীক্ষার প্রিলিতেও পাস করতে পারেননি। অন্যটি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেও সেটি বাতিল হয়ে যায়। এরপর পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পান তিনি। এরপর ১০ বছর ধরে এই পদেই চাকরি করছেন। বর্তমানে তিনি মুরাদনগর উপজেলায় কর্মরত আছেন।
সোহেলের এলাকাবাসীর বক্তব্য, ভাইয়ের দেওয়া ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রে চাকুরীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় হালিমা বেগম। সোহেল ও হালিমা কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার আমড়াতলী ইউনিয়নের বানাগুয়া গ্রামের আব্দুল ওহাবের ছেলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বলেন, আমাদের ক্লাস্টারের দায়িত্বে থাকা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা হালিমা বেগম টাকা পেলে দায়িত্বে অবহেলা করেন। আমাদের ডিপিএড অর্থ ছাড় করাতেও কৌশলে উৎকোচ চেয়েছেন তিনি। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে টাকা ফেরত পেয়েছি আমরা। এছাড়াও টাকা পেলে শিক্ষকদের অবৈধভাবে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিয়ে থাকেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এইচএসসি পরীক্ষার্থী বলেন, আমাদের এইচএসসি পরীক্ষার সময় রুমে প্রবেশ করে কারণ ছাড়াই আমাদের বিরক্ত করতো তিনি। তাই ভয়ে আমাদের পরীক্ষায় ব্যাঘাত ঘটতো। তারপর তাকে এক অভিভাবক থেকে টাকা গ্রহণ করতে দেখেছি। সেইদিনের পর তিনি আমাদের আর বিরক্ত করেন নি।
এ বিষয়ে হালিমা বেগম বলেন, আমার ভাইয়ের প্রশ্নে আমি পরীক্ষা দিইনি। আমি নিজ যোগ্যতায় পাস করেছি। যদিও বিসিএস প্রিলিতে আমি পাস করতে পারিনি। ভাইয়ের এসব বিষয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি আমার বিশ্বাস হয় না।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সফিউল আলম বলেন, বিষয়টি খুবই কনফিডেনসিয়াল (গোপনীয়)। বিষয়টি সত্য হলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে আমাদের সহযোগিতা লাগলে আমরা প্রস্তুত আছি। এ ছাড়া কোনও মন্তব্য করতে চাই না।
জেএন/এমআর