ইতিহাসগতভাবে বাঁশখালী নৌকা তথা আওয়ামী লীগ বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন বাঁশখালী (চট্টগ্রাম-) আসনে জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।
তিনি শনিবার (২২ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। শুক্রবার বাঁশখালীর উত্তর চাম্বল এলাকায় তাঁর গাড়িবহরে হামলা ও গুলি বর্ষণের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২১ ডিসেম্বর প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে চাম্বলে পথসভা করতে যাওয়ার সময় উত্তর চাম্বলের শিকদার দোকান এলাকায় বিতর্কিত চেয়ারম্যান মুজিবুল হকের নেতৃত্বে ৪০ থেকে ৫০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী আমার গাড়িবহরে গুলি বর্ষণ করে। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এরপরও আমি সভাস্থলে পৌঁছে বক্তব্য দেয়া শুরু করি। বক্তব্য রাখার সময় বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটে আবারো তারা গুলি শুরু করে। এ সময় নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে স্থানীয় জনতা আমাকে রক্ষ করে।
তিনি আরো বলেন, বিকাল সাড়ে ৫টায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী সশস্ত্র দল নিয়ে আমার বাড়ি ঘেরাও করে প্রকাশ্যে গুলি করতে থাকে। তারা রাত ১০টা পর্যন্ত দফায় দফায় গুলি চালায়। এ সময় পুলিশ ৩০ থেকে ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করে। আমি তাদের মুক্তি দাবি করছি।
তিনি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন হবে তার একদিকে নৌকা ও লাঙ্গলের মহাজোট, অন্যদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এ আসনে বিএনপি ও জামায়াত আলাদা নির্বাচন করছে। গত উপজেলা নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে বাঁশখালীতে জামায়াত প্রথম, বিএনপি দ্বিতীয় ও আওয়ামী লীগ তৃতীয় স্থানে রয়েছে। এরপর গত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সমর্থিত ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্বাচিত করে আনতে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাকে বর্তমান এমপি মারধরও করে। সে ঘটনার এক বছর পর নতুন নির্বাচন কর্মকর্তাকে দিয়ে কারচুপির মাধ্যমে কিছু বিতর্কিত ব্যক্তিকে তিনি চেয়ারম্যান বানান।
মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ১০৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করেনি। এমনকি ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সারাদেশে মহাজোট ২৭১টি আসন পেলেও বাঁশখালীতে নৌকা বিজয়ী হয়নি। ইতিহাসগত ভাবে তাই বাঁশখালী নৌকা তথা আওয়ামী বিরোধী। এ এলাকা থেকে আমি চারবার নির্বাচনে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হই। বিগত ২০ বছর আমি নির্বাচন থেকে বাইরে থাকলেও বাঁশখালীর মাটি ও মানুষের সঙ্গে আমার হৃদয়ের সম্পর্ক বজায় রেখেছি। আসন্ন নির্বাচনে কোন প্রার্থীর জনসমর্থন বেশি তা ইতোমধ্যে বাঁশখালীর চার প্রান্তে আমার চারটি বড় সভায় প্রমাণ মিলেছে। প্রত্যেক জনসভায় ২০ থেকে ৩০ হাজার লোকের সমাগম হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন সময় হয়েছে মহাজোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত নেওয়ার। কারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে লাঙ্গলের সঙ্গে জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্টের। নৌকা প্রদিদ্বন্দ্বিতায় আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।