‘আন্দোলনে গুলি না চালানোর’ রিট খারিজের আদেশে হাইকোর্ট বলেছেন, যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে, তবে পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ব্যবহার করতে পারবে। আইনের লঙ্ঘন না হলে বা দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না।
রোববার (৪ আগস্ট) আন্দোলনে গুলি না চালানোর রিট খারিজ করে বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দেন।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেনঃ
১. বাংলাদেশের সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণ মিছিল, সমাবেশ ও জনসভায় অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকবে।
২. মানুষের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ জীবন। তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে মানুষের জীবন এবং মর্যাদা রক্ষায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৩. অনিবার্য প্রয়োজন ছাড়া আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দায়িত্ব পালনের সময় বল প্রয়োগ করতে পারবে না।
৪. দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মানবাধিকার ও মানুষের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
৫. সবার জন্য শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতা থাকবে এবং তা সমানভাবে উপভোগ করতে পারবে। কোনো কর্তৃপক্ষ ব্যক্তি-গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে বৈষম্য করতে পারবে না।
যখন কোনো সাধারণ সমাবেশ বা মিছিল বেআইনি সমাবেশ-মিছিলে পরিণত হবে, তখন পুলিশের কী দায়িত্ব? আদালত বলেন, বেআইনি সমাবেশ, দাঙ্গা ও জনশৃঙ্খলা বা জনশান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে পুলিশ সংবিধানের সংশ্লিষ্ট অনুচ্ছেদ, দণ্ডবিধি ও পদ্ধতিগত আইনের প্রয়োগ করতে পারবে।
এক্ষেত্রে সংবিধানের ৩২, ৩৩(১)(ড), ৩৬, ৩৭, ৩৮ অনুচ্ছেদ, ফৌজদারি কার্যবিধির ১২৭ থেকে ১৩২ ধারা, বেঙ্গল পুলিশ প্রবিধি (পিআরবি)’র ১৫৩, ১৫৪, ১৫৫, ১৫৬ ও ১৫৭ এবং দণ্ডবিধির ৯৬ থেকে ১০৬ পর্যন্ত বিধি অনুসরণ করবে।
আদালত আদেশে বলেন, যদি কেউ আইন লঙ্ঘন করে, তবে পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল ব্যবহার করতে পারবে। আইনের লঙ্ঘন না হলে বা দাঙ্গা না বাঁধলে কোনো তাজা গুলি ব্যবহার করা যাবে না।
আদালত আরও বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার পাশাপাশি পুলিশকে আইনি কাঠামোর মধ্যে থাকা অপরিহার্য।
জেএন/এমআর