নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ১৭ উপদেষ্টার মধ্যে জায়গা পেয়েছেন ড. মাওলানা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম আলেম উপদেষ্টা। দায়িত্ব পাওয়ার পর তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় খালিদ হোসেন বলেন, আমরা একটি ক্রান্তিকাল পেরিয়ে দায়িত্ব নিয়েছি।
এ সময় আমাদের মূল কাজ শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও বজায় রাখা। মানুষের মধ্যে যে পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে তা নিরসন করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের একটি সুস্থ পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেন আমরা সুস্থ প্রতিনিধিত্বশীল নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারি এবং জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে পারি। মানুষের মধ্যে যেন স্বস্তি ফিরে আসে প্রথমে এ নিয়ে আমরা কাজ করব। বাকি কাজগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে করব।
আ ফ ম খালিদ হোসেনের পুরো নাম আবুল ফয়েজ মুহাম্মদ খালিদ হোসেন। তিনি ১৯৫৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত সাতকানিয়া উপজেলার মাদার্শা ইউনিয়নের মক্কার বাড়ির এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুহাম্মদ হাবিবুল্লাহ একজন ইসলামি পণ্ডিত ছিলেন।
সুন্নি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত খালিদ হোসেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নায়েবে আমির ছিলেন।
বর্তমানে তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শিক্ষা উপদেষ্টা, মাসিক আত তাওহিদের সম্পাদক, বালাগুশ শরকের সহকারী সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের কোরআনিক সায়েন্সেস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অতিথি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।
এ ছাড়া তিনি ওমরগণি এমইএস কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের খণ্ডকালীন অধ্যাপক এবং নেজামে ইসলাম পার্টির ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসমাজের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন।
বিশ্ব মুসলীম লীগের মুখপাত্র দ্য ওয়ার্ল্ড মুসলিম লীগ জার্নালসহ বিভিন্ন সাময়িকীতে তার দুই শতাধিক গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
বাবুনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির মাধ্যমে খালিদ হোসেনের শিক্ষাজীবন শুরু। এখানে তিনি তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত তিনি আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পটিয়ায় লেখাপড়া করেন।
১৯৭১ সালে সাতকানিয়া আলিয়া মাহমুদুল উলুম মাদ্রাসা থেকে প্রথম বিভাগে আলিম ও ১৯৭৩ সালে ফাজিল পাস করেন। ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত চট্টগ্রাম চন্দনপুরা দারুল উলুমে হাদিস অধ্যয়ন করেন।
১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে কামিল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৮২ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) ও ১৯৮৩ সালে একই বিষয়ে এমএ পাশ করেন।
পরে ২০০৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কলারশিপ নিয়ে ‘হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর খুতবা : একটি সামাজিক-সাংস্কৃতিক গবেষণা’র ওপর পিএইচডি করেন খালিদ হোসেন।
জেএন/পিআর