অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সংকটকালে ছাত্রদের আহ্বানে আমরা সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।
কখন নির্বাচন হবে সেটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, আমাদের নয়। দেশবাসীকে ঠিক করতে হবে আপনারা কখন আমাদের ছেড়ে দেবেন।
রোববার (২৫ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই ও আগস্টে ছাত্র জনতার প্রতিরোধে দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। আমি সেই সকল তরুণদের সহযোদ্ধা হিসেবে যোগ দিয়েছি। বলেন, লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ফ্যাসিবাদের হাতে শেষ হয়ে গেছে। দেশের তরুণরা আবার সেই দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্বৈরাচারী সরকার শিক্ষাখাতকে পঙ্গু করে দিয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাত, অর্থনৈতিক খাতকে পঙ্গু করে দিয়ে গেছে। শত কোটি টাকা পাচার করেছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের ব্যক্তিগত হাতিয়ার বানিয়েছে।
তিনি বলেন, তারা মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে বছরের পর বছর। মানুষের এগিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সেই অবস্থা থেকে যারা এই দেশকে উদ্ধার করেছে আমি সেইসকল তরুণদের আন্দোলনের সাথে অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি বলেন, আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি মুক্ত বাতাসে মানুষ চলাচল করতে পারবে। এই পথচলায় আমরা সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। প্রতিটা নাগরিকের মানবাধিকার থাকবে সুরক্ষিত।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে আপনাদের অনেক দুঃখ কষ্ট জমা হয়েছে। আমরা সবই জানি। আপনারা আপনাদের দাবি দাওয়াগুলো লিখিত আকারে জমা দিন। আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো। দয়া করে ঘেরাও করে আমাদের কাজে বাধা দেবেন না।
তিনি বলেন, আমরা এক পরিবার। আমাদের এক লক্ষ্য এক। কেউ যেন সেটা প্রতিহত না করতে পারে সে জন্য আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
আমাদের কাছে আপনাদের প্রত্যাশা অনেক। আমরা বদ্ধ পরিকর। আমাদের পর্বতসমান চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা দরকার। আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই যেখানে জনগণ সব ক্ষমতার উৎস হবে।
তিনি বলেন, জুলাই আগস্টে হতাহতের ঘটনা তদন্তের জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধানকে বাংলাদেশে এসে তদন্তের অনুরোধ করা হয়েছে। এ সপ্তাহেই তদন্ত শুরু হবে।
ড. ইউনূস বলেন, ন্যায়বিচারের জন্য যা যা করা দরকার তাই হবে। ছাত্র-জনতা আন্দোলনে সব আহতদের খরচ সরকার বহন করবে।
পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। জুলাই গণহত্যা ফাউন্ডেশন নামে একটি সংস্থা খোলা হয়েছে যার প্রধান আমি নিজে। বিদেশে অবস্থানরতদের এই ফাউন্ডেশনে সহায়তা করার আহ্বান জানাই।
জেএন/পিআর