জরুরিভাবে বিইআরসির গণশুনানির মাধ্যমে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও এলপিজির দাম যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে এনে সাধারন জনসাধারণকে স্বস্তি দেয়ার জন্য উদ্যোগ গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির নেতৃবৃন্দ।
নের্তৃবৃন্দরা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গুটিকয়েক ব্যবসায়ী নামক লুটেরাদের লুটপাটের সুযোগ করে দিয়ে বিগত ১৬ বছর যাবত বিইআরসিকে অকার্যকর করে গ্যাস, বিদ্যুৎ, এলপিজির দাম প্রতিনিয়ত বাড়িয়ে জনজীবনকে দুর্বিসহ করে ফেলেছিলো।
অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের বিগত সরকারের সে সিদ্ধান্তটি বাতিল করেছেন। বিশ্বব্যাপী জ্বালানী তেলে দাম অনেক দিন ধরেই নিন্মমূখি হলেও সরকার দাম সমন্বয়ের কথা বলেও তা করেনি। তাই জরুরিভাবে উদ্যোগ গ্রহনের দাবি জানান তারা।
গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকসহ খাদ্য মূল্যস্ফীতি বাড়া ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসাবে জ্বালানী তেলের দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছেন।
আর জ্বালানি তেলের দাম কমলে গণপরিবহন ভাড়া কমবে, কৃষি উৎপাদনসহ ব্যবসা বানিজ্যের অনেকগুলো বিষয়ের খরচ কমবে। যার সরাসরি প্রভাব পড়বে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দামের ওপর।
এটি মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরাসরি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আর অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের অন্যতম প্রধান অঙ্গীকারের অন্যতম হলো মুল্যস্ফীতি সহনীয় রাখা।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলের দাম বেশ অনেকদিন ধরেই নিন্মমুখি হলেও দেশে বিগত সরকার তেলের দাম না কমিয়ে উল্টো বাড়িয়ে দিয়েছে, ফলে সাধারণ মানুষের উপর মুল্যস্ফীতির হার বৃদ্ধিসহ জীবনযাত্রার অনেক খরচের চাপ বেড়েছে।
অধিকন্তু ২০২২ সালে এক লাফে লিটার ৫১ টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি করা হয়, পরবর্তীতে সমন্বয়ের কথা বলা হলেও তেমন কোন দাম কমায়নি।
সর্বশেষ ১লা জুন, ২০২৪ইং ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৭৫ পয়সা করে বড়িয়ে প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৭ টাকা ৭৫ পয়সা, পেট্রলের দাম ১২৭ টাকা এবং অকটেনে ১৩১ টাকা করা হয়।
সরকার বারবার বিপিসির লোকসানের কথা বললেও লোকসান, কেনা-কাটায় লুটপাট ও অনিয়ম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন না করে পরিকল্পিতভাবে আরও ভারী করেছেন।
বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, দেশের দক্ষিন-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় বিপুল সংখ্যাক লোকজন ঘরবাড়ী, সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। যেখানে এক করোনার ক্ষতি এখনও পুষানো যায়নি, সেখানে বন্যার ক্ষয় ক্ষতি পুষানো আরও অনেক কঠিন হবে।
ফলে জনগণের একটি বড় অংশের ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই এই সংকটকালীন সময়ে সরকার জ্বালানি তেলের ওপর ভ্যাট, ট্যাক্স কমিয়ে জ্বালানী তেলের দাম উল্লেখযোগ্য পরিমানে কমিয়ে সাধারণ জনগনের জীবন যাত্রায় স্বস্তি দিতে জনগণের পাশে থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন।
গণমাধ্যমে প্রেরিত বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রেসিডিন্ট আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কেএনএম রিয়াদ, ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।
জেএন/পিআর