মধ্যরাতে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয়ে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার একটি দরবার শরীফে ডাকাতি করতে গিয়েছিলেন একদল দুর্বৃত্ত।
তবে সুবিধা করতে পারেনি ভুয়া মেজরের টিম। জনতার সন্দেহে টিমের ৫ জন পালাতে সক্ষম হলেও ধরা পড়ে গণধোলাই খেয়েছেন সেনাবাহিনীতে কর্মরত এক সার্জেন্টসহ ৪ জন। পরে তাদেরকে আসল সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করেন স্থানীয় জনতা।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত ১১ টার দিকে উপজেলার চরপাথরঘাটা ইউনিয়নের খোয়াজনগর এলাকায় আলত্বাফিয়া ইয়াছিনিয়া আল এজাজ ইন্টারন্যাশাল এবং এতিমখানায় মসজিদ ও দরবারে সোয়াদিকীনে ৯ জন লোক যৌথ বাহিনীর গোয়েন্দা পরিচয়ে প্রবেশ করেন।
তারা তল্লাশীর নামে এতিমখানার লোকজনকে অবরুদ্ধ করে নগদ ৩ তিন লক্ষ টাকা ও ৬ হাজার দেরহাম এবং রিয়ালসহ প্রায় ৫ লাখ টাকা লুন্ঠন করেন।
পরে মাইক্রো বাস যোগে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হওয়ায় মাইক্রোবাস (চট্টমেট্রো-চ-১১-৬৮৯০) চালকসহ ৪ জনকে আটক করে গণধোলাই দেন। এরমধ্যে টিমের আরও ৫ জন কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশের টহল টিম ও সেনাবাহিনীর টহল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আটককৃতদের হেফাজতে নেয়।
আটকরা হলেন-বাঁশখালী উপজেলার মাষ্টারপাড়ার নাপোড়া গ্রামের বিধান দেবের ছেলে বিদ্যুৎ দেব (৩৫), শরীষা বাড়ী জেলার পৌরসভার বলারদীয়ার গ্রামের আজহারুল ইসলামের ছেলে মো. সুহেল আনোয়ার (৪০), কক্সবাজার পেকুয়া উপজেলার মেহেরনামা গ্রামের মৃত জামাল হোসেনের ছেলে মো. শফিকুল ইসলাম (৪৮) ও চট্টগ্রাম ভূজপুর থানার পোদ্দারপাড়া গ্রামের দুলাল বাবুর ছেলে সুমন কান্তি দে (৪০)।
পুলিশের তথ্যমতে, মো. সুহেল আনোয়ার ব্যক্তিগত নং-৪৫০২৬২২, পদবী-সার্জেন্ট, আর্মি সিকিউরিটি ইউনিট চট্টগ্রাম, সেনানিবাসে কর্মরত বলে জানা যায়। উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহিত আলোচনায় যথাযথ নিয়মে ক্যাপ্টেন মো. তাসলিম উল হাসানের নিকট তাকে হস্তান্তর করা হয়।
মো. শফিকুল ইসলাম নিজেকে আর্মির অবসর প্রাপ্ত মেজর বলে পরিচয় দেয়। তাছাড়া বিদুৎ দেব নিজেকে একটি গণমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দেন এবং সুমন পেশায় মাইক্রোবাস চালক।
আল এজাজ ইন্টারন্যাশাল-এতিমখানার পরিচালক মো. এজাজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা গেলেও দরবার শরীফ থেকে নগদ তিন লাখ টাকা ও সৌদি ৬ হাজার রিয়াল নিয়ে টিমের আরও ৫ সদস্য পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহির হোসেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর ‘মেজর’ পরিচয়ে ডাকাতি করতে গিয়ে চারজন আটক হয়েছে। আটকদের পরিচয় যাচাই-বাছাই ও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।
সিএমপি বন্দর জোনের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) শাকিলা সোলতানা জানান, ডাকাতির ঘটনায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া একজনকে সেনা হেফাজতে নিয়ে গেছেন বলে তিনি জানান।
জেএন/পিআর
