ভোটের বাকি আর মাত্র তিনদিন। দেশজুড়ে উত্তেজনা। কিন্তু এরমধ্যেও নিশ্চিন্ত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে কলকাতার আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, এবারও আওয়ামী লীগ জিতবে।
বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সুধাসদনে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের উপর আমার বিপুল আস্থা। তারা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। জনগণের ভোটে আমরা আবার নির্বাচিত হব।
এতটা নিশ্চিত কিভাবে হচ্ছেন- এমন প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রায় ৬০০ স্কুল পোড়ানোর কথা বাংলাদেশের মানুষ ভুলে যায়নি। মুছে যায়নি প্রিসাইডিং অফিসারসহ অজস্র নাগরিককে হত্যার স্মৃতি। রাস্তা কেটে মানুষের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে জনগণই রুখে দাঁড়িয়েছিল। তারা ভোটও দিয়েছিল। সেই জনগণ আবার আমাদেরই ভোট দেবে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের পর দেশে একের পর এক সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটেছে। সাধারণ মানুষ সে সব ভুলেনি। ওইসব ঘটনা যে রাজনৈতিক দলটি ঘটিয়েছিল, তারা জনসমর্থনহীন হয়ে পড়েছে। সেই জোরের জায়গা থেকেই ফের সরকার গঠনের ব্যাপারে আশাবাদী আওয়ামী লীগ।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের যুব সম্প্রদায় আওয়ামী লীগ সম্পর্কে খুবই উৎসাহী। বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসটাই মুছে ফেলা হয়েছিল। নতুন প্রজন্মের মধ্যে সত্যকে জানার আগ্রহ রয়েছে। ইন্টারনেটে খুঁজলেই একাত্তরের অনেক তথ্য এখন জানা যায়। ফলে, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার বিষয়টি এখন অনেক সহজ হয়ে গেছে। যার কারণে আওয়ামী লীগের প্রতি যুব সম্প্রদায়ের মতটাই পাল্টে গেছে।
নির্বাচন উপলক্ষে শেখ হাসিনা দেশের বিভিন্ন জায়গায় সফর করেছেন। সেই সফরে তিনি মানুষের কাছ থেকে ভালো সাড়া পেয়েছেন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, মানুষ অন্তর থেকে চাইছে, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসুক। তারা জানে, আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই তাদের ভাগ্য পরিবর্তিত হবে।
পাকিস্তান প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কারো সঙ্গে বৈরিতা না চাইলেও, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কাউকে নাক গলাতে দেবে না বাংলাদেশ।
বিভিন্ন মামলায় সাজাপ্রাপ্ত যে আসামিরা লন্ডনে বসে আছেন। তাদের সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্রিটেনের সঙ্গে কথা বলে ওই আসামিদের দেশে ফেরত এনে রায় কার্যকর করা হবে।
এবারের নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী কিভাবে ধানের শীষ প্রতীক পেল তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শেখ হাসিনা। তাঁর প্রশ্ন, যাদের নিবন্ধন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন, তাদের কিভাবে নমিনেশন দেওয়া হল? জামায়াত একাত্তরে গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। নারীদের তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছিল, ঘরবাড়ি দখল করেছিল। ওদের নমিনেশন দেওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই মানুষ শঙ্কিত।
ড. কামাল হোসেনের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কামাল হোসেনকে দেশের সংবিধান রচয়িতা বলা হয়। তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে নিজে দল গঠন করেন। ধানমণ্ডি থেকে দাঁড়িয়েছিলেন একবার। ওই নির্বাচনে তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। সেই তিনি কি-না গেলেন জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে। তবে অবাক হইনি। কারণ উনার শ্বশুরবাড়ি পাকিস্তানে। ছেলেদের একটু শ্বশুরবাড়ির প্রতি টানটা বেশি থাকে।