রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল বাকী বলেছেন, কালুরঘাট রেলকাম সড়ক সেতুর বিষয়ে কোরিয়ার সাথে আমাদের নতুন চুক্তি হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। এ সরকার আসার পরে একটি একনেকে সভা হয়েছে। তবে এ সভাতে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়নি। আমরা আশা করি পরবর্তী যে কোন একনেকে এটি অনুমোদন হবে। অনুমোদন হলে সেতুটি বাস্তবায়ন হয়ে গেলে বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের দুঃখ অনেকটা কেটে যাবে। এটি শুধু বোয়ালখালীবাসী নয় এটির সেবা সারা বাংলাদেশেই পাবে এবং এ অঞ্চলের (বোয়ালখালী) যোগাযোগ ব্যবস্থায় ব্যপক একটি পরিবর্তন আসবে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কালুরঘাট রেল সেতু পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন তিনি।
কবে থেকে কালুরঘাট সড়ক সেতুর কাজ শুরু হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আশা করি আগামী অক্টোবর মাসেই এটি অনুমোদন হয়ে যাবে। অনুমোদন হয়ে গেলে কিছু অফিসিয়াল কাজ আছে এগুলো সম্পন্ন করে সেতুর কাজ শুরু করতে পারবো তবে তার আগে বিধি বিধান মেনে সরকারি টেন্ডার প্রক্রিয়াতে যাবে।
প্রকল্প মেয়াদকাল ২০৩০ সালের জুন মাস পর্যন্ত। অন্যান্য প্রকল্পগুলোর সময় বারবার বৃদ্ধি পেলেও জাপান-কোরিয়ার প্রকল্প গুলো সাধারণত তাদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই শেষ করা হয়। আমরা আশা করি সে সময়ের মধ্যে (৫ বছর মেয়াদি) সেতুর কাজ শেষ করতে পারবো।
ঝূঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে রেল চলাচল নিরাপদ হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বুয়েট দ্বারা পরীক্ষা করেই সেতুটি সংস্কার করা হয়েছে। রেল চলাচলে সেতুতে কোন ঝূঁকি নেই। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই সেতুটি রেলের উপযোগী করা হয়েছে।
সেতুতে যানচলাচল কখন স্বাভাবিক হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংস্কার শেষ হলেই যানচলাচল স্বাভাবিক হবে। ধারণা করছি আগামী এক মাসের ভিতর যানচলাচল স্বাভাবিক হবে।
চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে দীর্ঘদিন ধরে লোকাল রেল বন্ধের বিষয়ে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ইঞ্জিনের অভাবের কারণে লোকাল রেলটি আমরা বন্ধ রেখেছিলাম। ইঞ্জিনের ব্যবস্থা হয়ে গেলে আমরা পুনরায় রেলটি চালু করবো।
বোয়ালখালীতে দুটি রেল ষ্টেশন থাকার পরেও কক্সবাজারগামী রেল একটি ষ্টেশনেও না থামার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন মাত্রতো উন্নয়ন শুরু হয়েছে। আপনারা একটু ধৈর্য ধরেন এগুলো সব সমাধান হবে। আগামীতে যে কোন একটি ষ্টেশনে রেল থামবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এদিকে পরিদর্শন শেষে চলে যাওয়ার সময় কালুরঘাট সেতুর পশ্চিমাংশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের তোপের মুখে পড়েন রেল সচিব আবদুল বাকী। সেতু সংস্কার করতে তিন মাসের কথা বলে ১ বছর ২ মাস সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে। এখনো কাজ কেন শেষ হচ্ছেনা ছাত্ররা জানতে চাইলে তিনি সন্তোষজনক কোন উত্তর দিতে পারেননি বলেন জানান ছাত্ররা। চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেল চলাকালে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যাওয়া আসা সহজ ছিল। রেল বন্ধ হয়ে যাওয়াতে তারা বিপাকে পড়েছে। নতুন বাংলাদেশে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেল চালু করাসহ বিভিন্ন দাবীর কথা জানান ছাত্ররা।
সেতু পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিমাদ্রি খীসা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারোয়ার, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালেয়র ছাত্র মো. মিজান, মো. রাব্বিসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/এমআর