জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণ দেয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে প্রফেসর ইউনূসের ভাষণের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নিজেদের সন্তোষের কথা ব্যক্ত করেন মহাসচিবের মুখপাত্র।
ড. ইউনূসের জাতিসংঘের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, পাশাপাশি তিনি এখন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা- এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সংস্থাটির স্থায়ী সংবাদদাতা মুশফিকুল ফজল আনসারী ব্রিফিংয়ে জানতে চান, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস কিছুক্ষণ পূর্বে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন।
তিনি ভাষণে বাংলাদেশের জটিল পরিস্থিতি, গাজাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গার চলমান যুদ্ধ এবং গাজা ও ইউক্রেনের মানবিক সংকটের কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি দীর্ঘ সময় ধরে জাতিসংঘের অংশীদার হিসাবে অবদান রেখে চলেছেন। তার আজকের এই ভাষণকে কীভাবে দেখছেন? আমার দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, প্রফেসর ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের মধ্যকার বৈঠক নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ কী জানাবেন?
ড. ইউনূস এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের বৈঠক ইস্যুতে ডোজারিক সাংবাদিক মুশফিককে জাতিসংঘ থেকে পাঠানো বিবৃতির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি বলেন, অধিবেশনে দেয়া প্রতিটি ভাষণ নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার সুযোগ নেই। কোনো দেশ যখন তাদের সবচাইতে সম্মানিত কোনো প্রতিনিধিকে জাতিসংঘে পাঠায় তা আমাদের অবশ্যই সন্তুষ্ট করে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্থোনিও গুতেরেস সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৈঠকে শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণসহ জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের মধ্যকার ঘনিষ্ট সম্পর্কের বিষয়টিকে সাধুবাদ জানান সংস্থাটির মহাসচিব।
জাতিসংঘের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের চলমান গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণের চলমান পরিস্থিতি এবং সংস্কার কার্যক্রমে জাতিসংঘ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে পুনরায় আশ্বস্ত করেন গুতেরেস। দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হয়।
ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে আজ আমি বিশ্বসম্প্রদায়ের এ মহান সংসদে উপস্থিত হতে পেরেছি।
আমাদের গণমানুষের, বিশেষ করে তরুণ সমাজের, অফুরান শক্তি আমাদের বিদ্যমান রাষ্ট্র কাঠামো ও প্রতিষ্ঠানগুলোর আমূল রূপান্তরের এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।
গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সমতা ও সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে একটি ন্যায়ভিত্তিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ হিসেবে আত্মপ্রকাশের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন ও সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান অধ্যাপক ইউনূস।
জেএন/পিআর