এ বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং। বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় স্টকহোমে অবস্থিত সুইডিশ একাডেমি থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে পুরস্কার দেওয়া হবে ১০ ডিসেম্বর। নোবেলজয়ী হান কাং পাবেন ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (১০ লাখ ডলার), যা বাংলাদেশি ১০ কোটি টাকা সমমানের।
৫৩ বছর বয়সী হানের জন্ম ১৯৭০ সালের ২৭ নভেম্বর। তার বাবা ঔপনাসিক হান সিউংয় য়ুন। ‘হোয়াইট’ উপন্যাসের জন্য ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার অর্জন করেন। মানবজীবনের নাজুক পরিস্থতির উন্মোচনের জন্য তাঁকে এ পদকে ভূষিত করে নোবেল কমিটি।
১৯৯৫ সালে ছোটগল্পের সংকলন প্রকাশের মধ্য দিয়ে হান কাংয়ের লেখালেখির আত্মপ্রকাশ। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘দ্য ভেজেটারিয়ান’। এই উপন্যাসের জন্য ২০১৬ সালে ম্যান বুকার ইন্টারন্যাশনাল পুরস্কার পান তিনি।
১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াংজুতে জন্ম হানের। তাঁর বাবাও ছিলেন ঔপন্যাসিক।
তি বছরের মতো এবারও প্রথা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার চিকিৎসাশাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এবার ৭ অক্টোবর নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। চিকিৎসায় মাইক্রোআরএনএ নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ এ বছর চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাবকুন নামের দুই মার্কিন বিজ্ঞানী। তাদের আবিষ্কার পৃথিবীতে মানুষের জীবন কী জটিল উপায়ে বিকশিত হয়েছে এবং কীভাবে মানবদেহ বিভিন্ন টিস্যু দিয়ে গঠিত– তার ব্যাখ্যায় সহায়তা করে। ৮ অক্টোবর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন জন জে হপফিল্ড ও জফ্রি ই হিন্টন। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যন্ত্রের শিখন পদ্ধতি সম্ভবপর করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য তাদের এ পুরস্কার দেওয়া হয়। তাদের গবেষণা যন্ত্রের শিখন পদ্ধতি ও এআই, তথা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস। তাঁর নামের সঙ্গে সংগতি রেখে পুরস্কারের নামকরণ করা হয়েছে। অর্থের পাশাপাশি একটি স্বর্ণপদক ও প্রশংসাপত্রও দেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সাহিত্যের নোবেল ঘোষণা করা হবে। আগামীকাল শুক্রবার শান্তি ও আগামী ১৪ অক্টোবর অর্থনীতির নোবেল বিজয়ীদের নামের ঘোষণা আসবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুবার্ষিকীতে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে পুরস্কার।
যার নামে ও অর্থায়নে নোবেল পুরস্কার, সেই আলফ্রেড নোবেলকে কেউ বলেন মৃত্যুর কারবারি, কেউ বলেন শান্তির দূত। একাধারে একের পর এক বিস্ফোরক ও যুদ্ধাস্ত্রের উপাদান আবিষ্কার করেছেন, সারা ইউরোপে বিরাট বিরাট কারখানা গড়ে তুলে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ উপার্জন করেছেন, কিন্তু জীবনযাপন করেছেন একাকী, নিরাসক্ত। জীবনে কোনোদিন ধূমপান করেননি, মদপান করেননি, এমনকি বিয়েও করেননি। তেমন কোনো বন্ধুবান্ধবও ছিল না আলফ্রেড নোবেলের। প্রথম জীবনে কবি হতে চেয়েছিলেন, অনেক কবিতাও লিখেছিলেন। প্রেম ছিল সেসব কবিতায়, ক্ষোভও ছিল। কিন্তু কোনো রচনাই তিনি প্রকাশ করেননি। অন্তর্মুখী এই মানুষটি একদিকে শক্তহাতে ইন্ডাস্ট্রি ও ব্যবসা সামলেছেন, অন্যদিকে নিরলস গবেষণায় আবিষ্কার করেছেন একের পর এক নতুন বিস্ফোরক। কিন্তু তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের চারপাশে একটা অদৃশ্য দেয়াল তুলে রেখেছিলেন, যে দেয়াল ভেদ করে তাঁর মনের খোঁজ পাওয়া সম্ভব ছিল না কারোই।
জেএন/এমআর