এবারের ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বটি ভালো যাচ্ছে না ফুটবল বিশ্বের অন্যতম বড় পরাশক্তি ব্রাজিলের। আট ম্যাচে দশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পঞ্চমে থাকা দলটি শঙ্কায় ছিল বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ্রগহণের সুযোগ নিয়েও। সেই শঙ্কা এখনো পুরোপুর যায়নি তবে চিলির মাঠে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলের জয় আপাতত ব্রাজিলকে শঙ্কামুক্ত করছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাত তিনটায় ম্যাচ ছিল আর্জেন্টিনার। সেই ম্যাচে ড্র করেছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তার তিন ঘন্টা পর শুরু হওয়া এই ম্যাচে অবশ্য শুরুতে গোল খেয়ে মনে হচ্ছিল হেরেই যাবে ব্রাজিল। তবে ইগর জেসুস ও লুইস এনরিকে তা হতে দেননি। এই দুইজনের গোলে প্রথমে গোল খেয়েও ২-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ব্রাজিল।
ব্রাজিল শুক্রবার ভোরের কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে চিলির বিপক্ষে ২-১ গোলে গুরুত্বপূর্ণ জয় অর্জন করেছে। যেখানে লুইস এনরিকের ৮৯তম মিনিটের নাটকীয় গোল দলদুটির মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। সেলেসাওদের খেলার মান খুব একটা ভালো না হলেও এই জয়ে সেলেসাও ৩টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের এক ধাপ উপরে উঠালো।
খেলার শুরুটা ব্রাজিলের জন্য খুবই খারাপ হয়েছিল। চিলির অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড এডুয়ার্ডো ভার্গাস মাত্র এক মিনিটের মধ্যেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। লোয়োলার নিখুঁত ক্রস থেকে ভার্গাসের হেডার গোলরক্ষক এডারসনের মাথার উপর দিয়ে চলে যায়, যা চিলিকে দ্রুত ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে দেয়। ব্রাজিলের দল শুরু থেকেই কিছুটা অগোছালো এবং ধীরগতির ছিল, এবং প্রথমার্ধ জুড়ে তারা তেমন কোনো সুবিধাই আদায় করতে পারেনি।
তবে প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে সেলেসাওরা তাদের ছন্দ খুঁজে পায়। ম্যানচেস্টার সিটির উইঙ্গার সাভিনহোর দুর্দান্ত ক্রস থেকে বোটাফোগোর স্ট্রাইকার ইগর জেসুস হেড দিয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন, যা প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে আসে। ১-১ গোলে সমতা ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে ব্রাজিল প্রয়োজনীয় প্রতিক্রিয়া দেখায়, যদিও এর আগে তারা তেমন কিছু করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচটি আরও বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে, অনেকগুলো হলুদ কার্ড ও বদলির কারণে খেলার গতি বারবার বাধাগ্রস্ত হয়। চিলি তাদের প্রাথমিক গতি কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয় এবং পুরো ম্যাচে মাত্র একটি শট লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয়। অন্যদিকে ব্রাজিল সুযোগ তৈরি করলেও গোল করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিল।
অবশেষে খেলার শেষ মুহূর্তে ব্রাজিলের প্রচেষ্টা সফল হয়। বদলি হিসেবে নামা বোটাফোগোর আরেক খেলোয়াড় লুইস এনরিক ৮৯তম মিনিটে পেনাল্টি বক্সের ভিতর থেকে দারুণ একটি কার্লিং শট করেন, যা নিচের বাঁ কোণায় ঢুকে যায়। এই গুরুত্বপূর্ণ গোলটি ব্রাজিলের চতুর্থ জয় নিশ্চিত করে এবং দরিভাল জুনিয়রের দলকে কিছুটা স্বস্তি দেয়।
এই জয়টি ব্রাজিলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এসেছে, কারণ দলের তারকা খেলোয়াড় ভিনিসিয়ুস জুনিয়র ও নেইমারকে ছাড়া দল কিছুটা সংগ্রাম করছে। কোচ দরিভাল জুনিয়রের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে তার আক্রমণাত্মক লাইনআপ এবং মধ্যমাঠের সিদ্ধান্ত প্রায়ই দলের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাড়াচ্ছে।
তবুও, এই জয়ে ব্রাজিল এখন ১৩ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে এবং ২০২৬ বিশ্বকাপের স্বয়ংক্রিয় কোয়ালিফিকেশন নিশ্চিত করার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছে। সেলেসাওরা আগামী ১৫ অক্টোবর পেরুর বিপক্ষে মুখোমুখি হবে, অন্যদিকে নবম স্থানে থাকা চিলি একই দিনে কলম্বিয়ার বিপক্ষে খেলবে।
জেএন/এমআর